নিজস্ব প্রতিবেদক
রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীস্থ বায়তুস ছালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে সমাজ কল্যাণ শিক্ষা তাহজিব ও তামাদ্দুন বিষয়ক সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন যে অভিযোগ তুলেছেন তা মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর বলে দাবি করেছেন মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ। মসজিদ এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। বুধবার সকালে রাঙামাটি প্রেস ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক। তিনি বলেন, বায়তুস ছালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটি তারুণ্য ক্লাব নামক একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেওয়ার নামে চার লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে আলাউদ্দিন গংরা যে দাবি তুলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মূলত স্থানীয় মুসল্লীদের দানকৃত নিজস্ব অর্থায়নে মসজিদটি পরিচালিত হয়। তারুণ্য ক্লাবকে উন্নয়ন বোর্ড থেকে একটি ১৬ লাখ টাকার প্রকল্প প্রদান করা হয়। কিন্তু ক্লাবের জায়গা নিয়ে সমস্যা থাকায় মসজিদ কমিটি, তারুণ্য ক্লাব ও উন্নয়ন বোর্ডের সাথে বোঝাপড়ায় অর্থগুলো মসজিদ কমিটিকে প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পের অর্থ দিয়ে মসজিদের জন্য দোকানঘর ও ইমাম সাহেবের বসতঘরের ৭০ভাগ নির্মাণ করা হয়। তারুণ্য ক্লাবের সৌজন্যে প্রাপ্ত অর্থের বিনিময়ে মসজিদের উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন হওয়ার কারণে মসজিদ কমিটির সার্বিক সিদ্ধান্ত অনুসারে তারুণ্য ক্লাবকে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদান করে তৎকালীন কমিটি। কিন্তু বর্তমানে আলাউদ্দিন ওই টাকা তারুণ্য ক্লাব থেকে ফেরতের কথা বলছে। এই বিষয়ে গত মাসে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় টাকা ফেরতের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু প্রকল্পটি তারুণ্য ক্লাবে এবং তাদের সাথে বোঝাপড়ায় সেই প্রকল্প মসজিদ কমিটিকে দেওয়া হয়েছে, তাই তাদের অনুদান হিসেবে তাদেরকে সেইসময় তিন লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া সেদিন সংবাদ সম্মেলনে যাকে ভাড়াটিয়া বলে পরিচয় দেওয়া হয় তিনি মসজিদের কোনও ভাড়াটিয়া নন। মসজিদের টাকা আত্মসাৎ করার মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়িয়ে মসজিদ কমিটির প্রত্যেককে প্রতারক হিসেবে উপস্থাপন করে সামাজিকভাবে হেয় করার পাশাপাশি ব্যক্তি জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। বর্তমানে এলাকায় প্রকৃত সত্য কেউ তুলে ধরতে চাইলে হুমকি প্রদান করছেন আলাউদ্দিন গংরা। আলাউদ্দিনের এমন কর্মকান্ডে মুসল্লীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার প্রেক্ষিতে মসজিদ কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে আলাউদ্দিনকে কমিটি থেকে অব্যাহতি প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগকারি এইচ এম আলাউদ্দিন বলেন, কমিটিতে আসার পর আমি জানতে পারলাম কমিটির ফান্ডে কোনও টাকা নেই। উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পটি যেহেতু সরকারি প্রকল্প আর সেটির কোনও লভ্যাংশ কাউকে দেওয়া যায় না, তাই আমি মসজিদের স্বার্থে তারুণ্য ক্লাব থেকে টাকাটা ফেরত আনার কথা বলেছিলাম এবং এই বিষয়ে মিটিংও হয়েছিল। মিটিংয়ের কয়েকদিন পর বলা হল এই বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই মসজিদের স্বার্থে আমি সংবাদ সম্মেলন করে সবার অবগতির মাধ্যমে টাকাটা ফেরত আনার চেষ্টা করেছি। অব্যাহতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এখনো কোনও কাগজ পাইনি। তারপরও তারা যদি এমন স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নেয়, আমি চুপ থাকবো না, সবাইকে নিয়ে মসজিদের টাকা ফেরত আনার চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
সংবাদ সম্মেলন এসময় উপস্থিত ছিলেন মসজিদ কমিটির উপদেষ্টা মো. তাজুল ইসলাম ও মো. ফজলুল হক, সভাপতি মো. শাহ আলম, সহ-সভাপতি মো. আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক, যুগ্ম সম্পাদক আজগর আলী, মো. নুরুল আফসার ও মাহবুব আলম।
এর আগে পৃথক আরেকটি মংবাদ সম্মেলন করে , তারুণ্য ক্লাবের নামে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড থেকে বরাদ্দ নিয়ে সেই টাকায় মসজিদের দোকানঘর নির্মাণ এবং ক্লাবকে চার লক্ষ টাকা দেয়ার নামে আত্মসাৎ করার অভিযোগ তোলেন মসজিদ কমিটির নেতা ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম আলাউদ্দিন। তার অভিযোগের পর আজকে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করল মসজিদ কমিটি।