রাঙামাটিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের আয়োজনে ও স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এনজিও ফোরাম এবং প্রগ্রেসিভের সহযোগিতায় বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে জল জীবিকার স্বীকৃতি: স্থানীয় প্রেক্ষিত বিষয়ক এই সিম্পোজিয়াম আয়োজন করা হয়।
রাঙামাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী অচিউর রহমানের সভাপতিত্বে সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া। এতে সাংবাদিক হরি কিশোর চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প (আইসিডিপি)’র উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মঞ্জু মানস ত্রিপুরা বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রগ্রেসিভের নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমা। জল ও জীবিকা নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হিলেহিলির উপদেষ্টা তনয় দেওয়ান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এডভোকেট কক্সী তালুকদার।
সিম্পোজিয়ামে বক্তারা বলেন, দেশের সমতল অঞ্চলের তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থা ভিন্ন। এখানে যেখানে সেখানে রিংওয়েল বা টিউবওয়েল বসানো সম্ভব হয় না। যার ফলে পাহাড়ের ছড়া, ঝিড়ি, ঝর্ণার পানির ওপরই দুর্গম এলাকার মানুষদের ভরসা করে চলতে হয়। এসব ছড়া, ঝিড়ি, ঝর্ণার পানির একমাত্র উৎস হচ্ছে বন। কিন্তু সচেতনতার অভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বন উজাড় করার কারণে দিন দিন পানির উৎসগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে। বক্তারা বলেন, শহরের চাইতে সরকারি বেসরকারিভাবে গ্রাম পর্যায়ে বন সংরক্ষণ ও পানি সংগ্রহের বিষয়ে সাধারণ মানুষদের অবহিত ও সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। এছাড়া যেসব দুর্গম এলাকায় দু একটি রিং বা টিউবওয়েল স্থাপন করা হচ্ছে সে এলাকার গ্রাম উন্নয়ন কমিটিকে রিং বা টিউবওয়েল মেরামত বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা প্রয়োজন। যাতে করে নষ্ট হলেই তা দ্রুত ঠিক করা যায়।
বক্তারা সিম্পোজিয়ামে, রাঙামাটির কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদের নৌ চলাচল নির্বিঘœ করা ও দুষণ রোধে কচুরিপানা নিয়ন্ত্রন করা। এ লক্ষে কচুরিপানার কম্পোস্ট তৈরিতে কৃষক পর্যায়ে প্রণোদনা ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করা। এতে করে কচুরিপানা জঞ্জাল নয় সম্পদে পরিণত হবে। পাহাড়ে সংরক্ষণমূলক কৃষি চাষাবাদে উদ্বুব্ধ করা। পরিনতিতে পাহাড় ছড়া বেঁচে যাবে, জীববৈচিত্র সংরক্ষিত হবে।
বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিনামূল্যে সংরক্ষণাগার ও লাগসই প্রযুক্তি সহায়তা প্রদান করা। সবার জন্য পানি নিশ্চিতকরণে পরিকল্পনা গ্রহণ করা এবং এতে নারী ও শিশুদের অংশগ্রহণ ও মতামত সুনিশ্চিত করা। পাহাড়ের বৈচিত্র ও মানুষের অভ্যাসকে ভিত্তি করে পানি ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়।