শুভ্র মিশু ॥
‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ^ব্যাপি পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষায় পার্বত্যাঞ্চলে বন সৃজনে আমরা অনেকগুলো প্রকল্প হাতে নিয়েছি। কিন্তু আঞ্চলিক কিছু দলের প্রবল বিরোধিতার কারণে আমরা বনায়নের এইসকল প্রকল্পগুলোর কাজে পরবর্তীতে আর এগিয়ে যেতে পারি নাই। আমি বেশকিছু বছর আগে কোরিয়া গিয়েছিলাম সেখানে মাটি আমাদের চেয়েও অনেক বেশি পাথুরে, তারপরও সেখানে বনায়ন অনেক বেশি। কারণ সেখানে তারা বৃক্ষ সৃজনকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে পেরেছিল। আমরাও কি পারি না পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণকে সামাজিক আন্দোলনে রুপ দিতে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখনই পার্বত্যাঞ্চল ভ্রমণ করেন তখনই হেলিকপ্টার থেকে কিছু বীজ ছিটিয়ে দেই, যাতে নতুন বৃক্ষ জন্মাতে পারে।’ বুধবার সকালে রাঙামাটি পৌরসভা চত্ত্বরে সপ্তাহব্যাপি বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এইসব কথা বলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি।
এসময় তিনি আরও বলেন, এখন শীত প্রধান দেশগুলোতে চলছে দাবদাহ। বাদ যায়নি বাংলাদেশও, আমাদের পার্বত্যাঞ্চলে আগে বর্ষা মৌসুমে টানা ১০-১২দিন পর্যন্ত বৃষ্টি হতো, তখন এমনও সময়ছিল গরম কাপড়েরও প্রয়োজন হতো। কিন্তু এখন বৃষ্টি হচ্ছে না। কারণ পাহাড়ে যেসব গাছ ছিল সেখানে মেঘের ধাক্কা লাগার ফলে এই অঞ্চলে বৃষ্টি হতো। অপরিকল্পিত ভাবে গাছ কাটার ফলে এখন আর গাছের মেঘের গায়ে ধাক্কা লাগার সুযোগ না থাকার কারণে বৃষ্টিও কমে গেছে। অপরদিকে বৃষ্টির পানি আগে গাছে পড়তো তারপর মাটিতে, এখন গাছ না থাকায় বৃষ্টির পানি সরাসরি মাটিতে পড়ছে, যার দরুন টপ সয়েল সরে যাচ্ছে। এতে ভূমিধস দেখা দিচ্ছে, কমছে কাপ্তাই হ্রদের গভীরতা। এই বছর বৃষ্টি না হওয়ায় কাপ্তাই হ্রদ এখনো জলশূণ্য। যার বিরুপ প্রভাব পড়ছে এই অঞ্চলের জনজীবন ও অর্থনীতিতে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণের কোন বিকল্প নাই। তাই আসুন আমরা সবাই গাছ লাগাই, যতœ করি, আগামী প্রজম্মের জন্য সুন্দর দেশ গড়ি।
সপ্তাহব্যাপি বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
এর আগে রাঙামাটি বনরুপাস্থ বিভাগীয় বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌরসভা চত্বরে এসে শেষ হয়।