বিশেষ প্রতিবেদক, বান্দরবান ও থানচি প্রতিনিধি
বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রস্ট (কেএনএফ) আতঙ্কে ৮ মাস পর গ্রামে ফেরায় খাদ্য সংকটে থাকা ১১০টি পরিবারের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। রোববার দুপুরে বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়ন এবং পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী, ঔষধ সামগ্রী, শীত বস্ত্র এবং ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে প্রধান অতিথি ছিলেন বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ পিএইচডি।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা, বান্দরবান সদর জোন কমান্ডার লেঃ কর্নেল মাহমুদুল হাসান পিএসসি, জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, খোরশেদ আলম, বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লাল জারলম বম, রোয়াংছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা বলেন, দীর্ঘ আটমাস পর গ্রামে ফিরে আসা ক্যাপলং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ৩০ জন এবং পরে পাইক্ষ্যং পাড়া ফুটবল মাঠে ৮০ জন পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী, ঔষধ সামগ্রী, শীত বস্ত্র এবং ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ’র ভয়ে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার অনেকগুলো পাড়া থেকে ৪শ জনের বেশি মানুষ গ্রামের ঘরবাড়ি ছেড়ে দূরদূরান্তে পালিয়ে যায়। কেএনএফ’র সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখোমুখি সংলাপে সমঝোতার পর গ্রামে ফিরতে শুরু করেছে গ্রামবাসী।
সেনাবাহিনীর ৬৯ সেনা রিজিয়ন কমান্ডার গোলাম মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমরা চাই একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ বান্দরবান। যেখানে নানা ধর্ম-বর্ণ সকল জনগোষ্ঠীর মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় থাকবে। যারা পূর্বে পাড়া থেকে চলে গিয়েছিলো তারা নির্ভয়ে আবার পাড়ায় ফিরে আসতে পারবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেনাবাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
প্রসঙ্গত: পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রস্ট (কেএনএফ) বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি তিনটি উপজেলায় পাহাড়ি গ্রামগুলোতে অপহরণ, হত্যা, নির্যাতন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। সেনাবাহিনীর সাথে কেএনএফ’র গোলাগুলি হতাহতের ঘটনাও ঘটে। চলমান সংঘাত নিরসনে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা’কে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করা হয়। গত ৫ নভেম্বর বান্দরবানের রুমায় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফ মধ্যে মুখোমুখি সংলাপে শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের ফলশ্রæতিতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নিজেদের আবাসস্থলে ফিরতে শুরু করেছে বম জনগোষ্ঠীর জনসাধারণ।