রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ৬০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা এই বাজেট ঘোষণা করেন। বাজেট ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, সদস্য হাজি মুছা মাতব্বর, অংসুইপ্রু চৌধুরী, রেমলিয়ানা পাংখোয়া, জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, ত্রিদীব দাশ, সবির কুমার চাকমা, জেবুন্নেসা রহিম জেবুসহ পরিষদের কর্মকর্তারাবৃন্দ।
বাজেট ঘোষণার পরে মুক্ত আলোচনায় রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল বলেন, রাঙামাটি স্বাস্থ্য সেবা জেলা পরিষদের কাছে শান্তি চুক্তি মোতাবেক হস্তান্তর করা হয়েছে। রাঙামাটি শহরের যে জেনারেল হাসপাতাল আছে এই বর্তমানে জেলা পরিষদের আওতায়, সুতরাং এই হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার দায়িত্ব জেলা পরিষদের। কিন্তু অতীতে স্বাস্থ্য খাতে যে বাজেট রাখা হয়েছে এতে করে তেমন কোনও উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের সমস্যা রয়েছে, এছাড়াও বিশেষ করে কেবিনের সমস্যা, সিটের কারণে পর্যাপ্ত রোগি ভর্তি করতে না পারা, এক্স-রে মেশিন স্থাপন, পর্যাপ্ত চিকিৎসকের সমস্যাসহ আরো অনেক সমস্যা আমরা দেখতে পায়। তাই এগুলো সমাধানের জন্য স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্ধ বৃদ্ধির সুপারিশ করেন তিনি। এছাড়া তিনি আরো সুপারিশ করেন, রাঙামাটি পর্যটন নগরী, এখানে পর্যটন শিল্প আরো উন্নত করার জন্য ধর্ম খাতে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে সেখান থেকে বরাদ্দ কমিয়ে স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে।
প্রবীণ সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে বলেন, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে রোগি ও চিকিৎসক থাকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই কিন্তু দেখা যাচ্ছে হাসপাতালের এরিয়ার মধ্যে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, রাঙামাটি স্থানীয় সংস্কৃতি উন্নয়নে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। সংস্কৃতি উন্নয়নের জন্য যে সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি তৈরি করা হয়েছে তাদের কি কাজ আছে তাও তারা জানে না। স্থানীয় সংস্কৃতি রক্ষার জন্য জেলা পরিষদ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি সুপারিশ করেন।
সাবেক প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক একেএম মকছুদ আহম্মেদ বলেন, রাঙামাটি পর্যটন শহর হিসাবে এখানে পর্যটন খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
এছাড়াও অন্য সংবাদকর্মীবৃন্দরাও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুক্ত আলোচনায় যোগ দেন।
বাজেট ঘোষণাকালে এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি টাকা বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে জেলা পরিষদ উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে। এই অর্থ বছরে রাঙামাটি জেলা পরিষদ বিশেষ কিছু কাজ হাতে নিয়েছে। আধুনিক রাঙামাটি বিনির্মাণে জেলা পরিষদ বিশেষভাবে কাজ করবে বলেও জানানো হয়।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করবো ধর্ম খাতে বাজেট কমিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বৃদ্ধি করতে। পর্যটন খাতে বাজেট বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাঙামাটি হচ্ছে পর্যটন নগরী এবং এই বছরকে সরকার পর্যটন বছর বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তাই আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি পর্যটন খাতে কিছু করার জন্য। বাজেটে যে সব সংশোধনী, পরিবর্তন, পরিবর্ধনের কথা বলা হয়েছে সেগুলো সংশোধন ও পরিমার্জন করা হবে বলেও তিনি জানান।
সাংবাদিকদের অন্য বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, টেন্ডার এর ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদেরকে দেওয়া এবং এটি ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঘোষণা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকরা স্কুলে উপস্থিত না থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যথাযথ প্রমাণসহ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বিভিন্ন দুর্যোগ ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে পর্যাপ্ত পরিমাণে সহায়তা করা হবে বলেও তিনি জানান।