ডেস্ক রিপোর্ট ॥
নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের দ্রুত ও অধিকতর কার্যকর বিকাশের উপযোগী সুশাসন নিশ্চিতে অনুকূল পরিবেশ তৈরির লক্ষে আন্তর্জাতিক ক্লিন এনার্জি দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সকালে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) রাঙামাটি আয়োজনে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সনাক, ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট (ইয়েস), অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপ (এসিজি), বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার জনগণ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে প্রফেসর বাঞ্ছিতা চাকমার সভাপতিত্বে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এবং টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট অর্জনে ক্লিন এনার্জি (পরিচ্ছন্ন জ¦ালানি) অপরিহার্য, সময়োপযোগী এবং নির্ভরযোগ্য জ¦ালানি হিসেবে বৈশি^কভাবে বিবেচিত। ক্লিন এনার্জি বলতে সেই উৎসগুলিকে বোঝায় যা উৎপাদন বা ব্যবহারের সময় স্বল্প বা শূন্য গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাধ্যমে পরিবেশ এবং মানব স্বাস্থ্যের ওপর ন্যূনতম প্রভাব ফেলে। ক্লিন এনার্জি হিসেবে নবায়নযোগ্য জ¦ালানি একটি আশার আলো হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা টেকসই ভবিষ্যতের পথে উত্তরণে অন্যতম অনুঘটক। সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ এবং ভূতাপীয় শক্তির মতো নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত জ¦ালানি আমাদের জীবাশ্ম জ¦ালানির উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস এবং বৈশি^ক উষ্ণায়নের প্রভাব কমাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্লিন এনার্জি তথা নবায়নযোগ্য জ¦ালানির উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য সচেতনতা বাড়াতে আন্তর্জাতিক নবায়নযোগ্য জ¦ালানি সংস্থা (আইআরইএনএ)-এর প্রতিষ্ঠার তারিখের সাথে সঙ্গতি রেখে ২০২৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ২৬ জানুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল ডে অব ক্লিন এনার্জি হিসেবে ঘোষিত হয়েছে (রেজোলিউশন অ/৭৭/৩২৭) এবং ২০২৪ সালে দিবসটি প্রথমবারের মতো পালিত হয়েছে এবং রাঙামাটিতে সনাক প্রথম বারের মত এ দিবসটি পালন করছে।
বক্তারা আরো বলেন, স্থানীয় প্রেক্ষাপট ও চাহিদাকে মাথায় নিয়ে পরিবেশ সংবেদনশীল এলাকায় নির্মীয়মাণ কয়লা ও এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো স্থগিত করে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ কৌশলগত, সামাজিক ও পরিবেশগত সমীক্ষা সম্পাদন সাপেক্ষে অগ্রসর হতে হবে। এনডিসি’র অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে বাতিল হওয়া কয়লা ও এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমিতে সোলারসহ নাবায়নযোগ্য জ¦ালানি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করে প্রকল্পের পরিকল্পনা, চুক্তির শর্ত নির্ধারণ, অনুমোদন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ¦ালানি প্রযুক্তির গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য তহবিল বরাদ্দ এবং গবেষণা ও শিল্পখাতের মধ্যে সহযোগিতা নিশ্চিত করা; নবায়নযোগ্য জ¦ালানিতে রূপান্তর প্রক্রিয়ায় তরুণ সমাজের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা, পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা; ইটভাটায় লাকরী ব্যবহার না করা ইত্যাদি বিষয় উপস্থাপন করেন।
প্রফেসর বাঞ্ছিতা চাকমা বলেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বিশ^াস করে যে নবায়নযোগ্য জ¦ালানি একটি ন্যায়সঙ্গত, পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। নবায়নযোগ্য জ¦ালানি উৎপাদন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে নীতি-স্পষ্টতা, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা এবং বিবিধ চ্যালেঞ্জসহ বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ¦ালানির রূপান্তর সম্পর্কে সচেতনতা ও চাহিদা বৃদ্ধি করতে নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা টিআইবির অন্যতম প্রাধান্যের ক্ষেত্র।
ইয়েস সদস্য ফাইজুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় রুবা ঢালি মানবন্ধনের ধারণাপত্র পাঠ করেন। এছাড়া ইয়ুথ ভলান্টিয়ার ফাউন্ডেশনের এর প্রতিষ্ঠাতা-শহীদুল ইসলাম, ছাত্র পতিনিধি-দ্যুতি মনি ও ইমাম হোসেন, হিল সার্ভিস প্রতিনধি মাসুদ রানা রুবেল, রাঙামাটি সনাকের পরিবেশ বিষয়ক এসিজি সমন্বয়কারী বাবুল মারমা, সনাক সদস্য ও টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ড মেম্বার অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা বক্তব্য প্রদান করেন।