নিজস্ব প্রতিবেদক
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বৈরী আবহাওয়া ও আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ রবিবার এই উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা ছিলো।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মনির হোসেন জানান, এর আগে ঘূর্ণিঝড়ের কারনে ২৯ মে নির্বাচন স্থগিত করে। স্থগিত হওয়া নির্বাচন ৯ জুন হওযার কথা ছিলো। বৈরি আবহাওয়া ও আইনশৃঙ্খলা অবনতির শঙ্কা দেখে দেওয়ায় দ্বিতীয় বারের মতো বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করে কমিশন। পরবর্তিতে উপযুক্ত সময়ে কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী নির্বাচনী এজেন্টদের হুমকি প্রদান ও নির্বাচনে অবৈধ প্রভাব খাটানোর জন্য বাঘাইহাটে সন্ত্রাসীদের সশস্ত্রভাবে অবস্থানের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং বাঘাইহাট থেকে তাদেরকে গ্রেফতারসহ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবিতে মাচালং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ডাকে শনিবার সড়ক অবরোধ পালিত হয়। এ অবরোধে ইউপিডিএফের বাঘাইহাট ইউনিট সমর্থন জানায়।
তবে সকাল-সন্ধ্যা এ অবরোধের ডাক দেয়া হলেও নির্বাচন কমিশন রবিবারের বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করলে শনিবার দুপুর ১২টায় অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
অবরোধের সমর্থনে সকাল ৬টা থেকে বাঘাইহাট বাজারের সংযোগ সড়কগুলোসহ বাঘাইহাট-সাজেক রুইলুই পর্যটন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধকারীরা পিকেটিং করে। অবরোধে বিপুল সংখ্যক নারীও রাস্তায় নামেন। ফলে এসব সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। ১২ কিলো এলাকায় জিসকা ফার্মাসিকাল কোম্পানির ঔষুধ সরবরাহের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া বাঘাইছড়ি-দীঘিনালা সড়কের ৭ কিলোমিটার এলাকায় মোটর সাইকেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অবরোধের কারণে সকালে সাজেক পর্যটন স্পটে প্রায় ৩০০পর্যটক আটকা পড়ে। পরে অবরোধ প্রত্যাহারের পর পর্যটকরা গন্তব্যে ফিরে।
এদিকে বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বৈরী আবহাওয়া ও আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মনির হোসেন।
তিনি জানান, এর আগে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ২৯ মে নির্বাচন স্থগিত করে। স্থগিত হওয়া নির্বাচন ৯ জুন হওযার কথা ছিলো। বৈরী আবহাওয়া ও আইনশৃঙ্খলা অবনতির শঙ্কা দেখে দেওয়ায় দ্বিতীয় বারের মতো বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করে কমিশন। পরবর্তিতে উপযুক্ত সময়ে কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. বেলাল হোসেন দাবি করেছেন, নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছিলো। ইতোমধ্যে হেলিসর্টি ৬টি কেন্দ্রের মধ্যে শুক্রবার তিনটি কেন্দ্রের নির্বাচনী সরঞ্জাম ও লোকবল চলে গিয়েছে। আজ(শনিবার) বাকিদের যাওয়ায় প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছিলো। এর মধ্যে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার খবর আসে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আকস্মিক স্থগিতের প্রতিবাদ ও রিটার্নিং কর্মকর্তার অপসারণ চেয়ে উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় স্থানীয়রা। তারা এসময় অফিসের সামনের প্রতিবাদ সভা পালন করে।
এদিকে, নির্বাচন কমিশন বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করলে দুপুর ১২টার সময় মাচালং ও উজো বাজারে পৃথক সমাবেশের মাধ্যমে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। মাচালংয়ের সমাবেশে বক্তব্য দেন সাজেক ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার দেব জ্যোতি চাকমা এবং উজো বাজারের সমাবেশে বক্তব্য দেন জোনাকি চাকমা।
উল্লেখ্য, মাচালং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে তিনটি মাইক্রোবাসে করে ৫০ জনের মতো সন্ত্রাসী বাঘাইহাটে বাঘাইহাট কেপিএম-এর পরিত্যক্ত অফিসে সশস্ত্রভাবে অবস্থান নেয়।
এছাড়া কয়েকদিন আগে থেকে তারা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী অলিভ চাকমা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমিতা চাকমার নির্বাচনী এজেন্টদের হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন মাচালং নির্বাচন পরিচালা কমিটির সদস্য সচিব বিপুল চাকমা। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে না। তাই প্রশাসনকে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।