বান্দরবানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরই খুলে দেয়া হলো দেশের সবচেয়ে উঁচু থানচি-আলীকদম সড়কপথ। বান্দরবানের থানচি-আলীকদম উপজেলা অভ্যন্তরিণ সড়কটি সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে প্রায় আড়াই হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ার ওপর দিয়ে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি’র সঙ্গে কথা বলে সড়কটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় বান্দরবান জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব শফিকুল ইসলাম, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম রিজিয়ন কমান্ডার মেজর জেনারেল শফিকুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার কোরের প্রধান মেজর জেনারেল আব্দুল কাদিম, বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নকীব আহমেদ চৌধুরী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়রম্যান ক্যশৈ হ্লা, জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরীসহ স্থানীয় সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্যবাসীর যোগাযোগ এবং আর্থ-সামাজিক ভাগ্য উন্নয়নে সহায়ক হবে সড়কটি। পার্বত্যবাসীর শান্তির জন্য ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছিল। আওয়ামীলীগ সরকার পার্বত্যাঞ্চলের মানুষের পাশে ছিল এবং আজীবন থাকবে। চুক্তি সম্পাদনের সময়ও একটি গোষ্ঠী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তারা আজও তৎপর রয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলের শান্তি চাই না বিএনপি-জামায়াত জোট। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে উঁচু সড়কের উদ্বোধন করলাম। একদিন সড়কটি ভ্রমণে যাবো। দেশের মাটিতে পাহাড়ের চূড়ায় সর্বোচ্চ উঁচু সড়কের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য স্বচক্ষে দেখার সুযোগ মিস করা যাবে না।
পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী পদক্ষেপ। পার্বত্যাঞ্চলের সমস্যা সমাধানে অন্য কোনো সরকারই এগিয়ে আসেনি। আওয়ামীলীগ সরকার শান্তি চুক্তি করার পর পাহাড়ে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোয়া লেগেছে দুর্গম অঞ্চলগুলোতেও। পাহাড়ের মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে।
প্রকৌশল শাখা জানায়, ১৯৯৯ সালে সড়ক জনপথ বিভাগ প্রথমে থানচি-আলীকদম অভ্যন্তরিণ সড়কের নির্মাণ কাজ আরম্ভ করেছিল। চার বছর সড়ক তৈরির কাজ করার পর ২০০১ সালে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল শাখা ১৭ ইসিবিকে সড়কটি হস্থান্তর করা হয়। ২০০১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৭ ইসিবি ১৮ কিলোমটিার পর্যন্ত সড়কটি নির্মাণ কাজ করে। গতবছরের অক্টোবর থেকে সড়কটি দেয়া হয় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কারের শাখা ১৬ ইসিবিকে। তারা থানচি থেকে আলীকদম পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটারের দীর্ঘ সড়কটি দুই কিলোমিটার কমিয়ে ৩৩ কিলোমিটারে নিয়ে আসে। প্রায় ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়টি নির্মাণ করা হয়েছে।