খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির শিল্পী মিন্টু বিকাশ চাকমা(৫৪)। শিল্পী সত্ত্বা লালন করা মানুষটির দীর্ঘ জীবন ব্যয় করেছেন সংগীতের পেছনে। তাই হয়তো অসুস্থ মিন্টুর ইচ্ছে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার। সহ শিল্পীরাও ইচ্ছে অনুযায়ী তাঁর জন্য আয়োজন করে বিশেষ অনুষ্ঠানের। অসুস্থ শরীর নিয়ে সোফায় শুয়ে উপভোগও করেছেন তিনি। আর ইচ্ছে পূরণের একদিন পর মারা গেলেন মিন্টু বিকাশ চাকমা।
বৃহষ্পতিবার(১৮ মে) সকালে সাড়ে ১১টার দিকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমেছে।
জানা যায়, মিন্টু বিকাশ চাকমার দুটি কিডনি নষ্ট। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। ভারত, চট্টগ্রামে চিকিৎসা শেষে গত ৭দিন ধরে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ সকালে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহ শিল্পীরা ছুটে যান।
মিন্টু বিকাশ চাকমা পেশায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের গাড়ি চালক। তবে নেশায় সংগীত শিল্পী ও গিটারিস্ট। বুধবার(১৭ মে) তার ইচ্ছে অনুযায়ী একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে অসুস্থ শরীর নিয়ে মিন্টু বিকাশ চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
খাগড়াছড়ি হিলস্টার মিউজিক্যাল গ্রুপ এর টিম লিডার রুপক আচার্যী বলেন, মিন্টু দাদা’কে অসুস্থ অবস্থায় যখন দেখতে যাই তখন তিনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমরা সব শিল্পীরা দ্রুত উনার জন্য গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। মৃত্যুর আগে উনার শেষ একটি ইচ্ছে পূরণ করতে পেরেছি দেখে আমাদের ভালো লাগছে।
অরণ্য ব্যান্ডের টিম লিডার রাকেশ দে বলেন, দাদাকে(মিন্টু) এত তাড়াতাড়ি হারাবো ভাবিনি। শিল্পীরা মানুষকে আনন্দ দিতে দিতে জীবন কাটিয়ে দেয়। মিন্টু দাদাও তেমনি একজন। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। তার মৃত্যু খাগড়াছড়ির সংগীত জগতের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
মিন্টু বিকাশ চাকমার ছেলেন অন্তু চাকমা বলেন, শুক্রবার(১৮ মে) বিকালে জেলা সদরের জামতলী এলাকায় তার শেষ কৃত্য সম্পন্ন হবে। মিন্টু বিকাশ চাকমা স্ত্রী, তিন ছেলে-মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।