শংকর হোড়
একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের জন্য আলাদা ভিসানীতি সম্মানজনক নয় বলে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, কার স্বার্থে এবং কোন যুক্তিতে একটি স্বাধীন দেশকে অপমানিত করলেন তা বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, ভিসানীতির অন্তরালে যদি কোনও ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যায়, তবে বাংলার মানুষ সেই ষড়যন্ত্র বরদাশত করবে না। রবিবার রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাঙামাটির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাজি মুছা মাতব্বরের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খানম এমপি, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আলহাজ¦ আমিনুল ইসলাম আমিনসহ জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির আন্দোলনে জনসমর্থন নেই। তারা বিদেশি প্রভুর সহায়তায় সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু তিনি স্পষ্ট করে বলেন, নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে এবং সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। আর বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করারও আহŸান জানান হানিফ।
কেন্দ্রীয় নেতা হানিফ আরো বলেন, আমেরিকা গণতন্ত্রের সবক দেয়। মানবাধিকারের কথা বলেন। কিন্তু এই ধরনের কথা আমাদের শঙ্কা লাগে। কারণ তারা ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া ও মিশরেও একই ধরনের কথা বলে সরকার উৎখাত করেছে। সেসব দেশ আজ যুদ্ধবিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। তাই বাংলাদেশেও নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এসব কথা বলে অন্য কোনও ষড়যন্ত্র হলে আমরা তা প্রতিহত করবো।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। জনগণ তাদেরকে প্রত্যাঘাত করেছে। তারা আন্দোলনের নামে সহিংসতা চালিয়েছে। আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে ৩৫০জন সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। তারা জানে জনগণের ভোটে তাদের নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই। তাই তারা বিদেশি প্রভুর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছে।
তৃণমূল নেতাদের দাবির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, দীপংকর তালুকদারের নমিনেশন নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। আমার নিজে নমিনেশন নিয়ে আমি শঙ্কায় থাকলেও উনার মনোনয়ন নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাঙামাটিতে দীপংকর তালুকদারের বিকল্প কেউ নেই। এমনকি দীপংকর তালুকদারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকেও কিছু বলতে শুনিনি।
এসময় বক্তারা বলেন, উন্নয়নশীল দেশ, মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। অনেক অসহায় মানুষ ঘর পেয়েছেন, শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতে বই পাচ্ছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ হচ্ছে। পদ্মা সেতু অনেক মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সমুদ্র বন্দর এবং দেশে জুড়ে মডেল মসজিদ হচ্ছে। এসব শেখ হাসিনার অবদান। দেশকে এগিয়ে নিতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান তারা।
প্রতিনিধি সম্মেলনকে ঘিরে তৃণমূল নেতাকর্মীরা সকাল থেকে দলে দলে প্রবেশ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে। রাঙামাটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন তারা। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনের পর জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন অতিথি ও দশটি উপজেলার নেতৃবৃন্দ। শুরুর পর থেকে বক্তব্য রাখছেন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলার নেতাকর্মীরা। এসব সময় তারা তাদের দাবি জানান।