আরমান খান ॥
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদুতে এক ঘন্টার বৃষ্টিতে একটি নির্মাণাধীন সড়ক বিলীন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকালে ও রাতে দুই দফায় এক ঘন্টার মতো ভারী বৃষ্টিপাত হয় উপজেলার সদর ইউনিয়নের দজরপাড়া এলাকায়। এই এলাকায় সম্প্রতি দজরপাড়া হইতে ভুইয়াছড়া এলাকায় মধ্যে একটি কার্পেটিং সড়ক নির্মাণের কাজ চলছিল। হঠাৎ ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলে সড়কের ইট, কংকর ও বালু পানিতে ভেসে যায়। ফলে স্থানীয়দের যাতায়াত ও কৃষিপণ্য পরিবহনে ভোগান্তি বেড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কোটি নয় লক্ষ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা কাজটি করার টেন্ডার পায়। তবে টেন্ডার পাবার প্রায় একবছর পর কাজটি শুরু করে বলে জানা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল চাকমা বলেন, রাস্তাটির কাজ চলছে গত আট মাস হলো। সোমবারের বৃষ্টিতে সড়কটি ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমাদের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এর আগে ইটের সড়কটি আমাদের জন্য ভালো ছিল।
স্থানীয় কার্বারি (পাড়া প্রধান) দ্বীপ্ত জীবন চাকমা বলেন, রাস্তাটি ব্যবহার করার আগেই শেষ হয়ে গেল। পুনরায় নির্মাণ করতে আবারো অনেক সময়ের ব্যাপার। এখন আবারও এখানকার মানুষের চলাচলে অনেক কষ্ট হবে।
লংগদু সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য বিনয় চাকমা বলেন, এলাকাটি আমার ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। রাস্তাটি নির্মাণে এখানে তাড়াহুড়া করে ভরাট মাটির ওপর ইট কংকর বিছানো হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি ধসে গেছে এবং ইট কংকর বালু সব ভেসে গেছে। এই বর্ষায় আর এখানে কাজ করা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি বেড়ে গেল।
সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতি ও এলজিইডির তদারকির অভাবে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে লংগদু সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা বলেন, লংগদু ইউনিয়নের ওয়ার্ডগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো অনেক নাজুক। এই সড়কটি হলে উপজেলা সদরের সাথে ৪টি ওয়ার্ডের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। আমরা চাই দ্রুত সড়কটি পুনঃনির্মাণ করে জনসাধারণের চলাচলের উপযুক্ত করা হোক।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক নির্মাণের ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়কের কাজটি চলমান অবস্থায় ভারী বৃষ্টি ও পাাহাড়ি ঢলে বেশ কিছু স্থানে ধসে গেছে। এসব স্থানে গার্ডওয়াল দিতে হবে, তা নাহলে রাস্তা টিকিয়ে রাখা যাবে না। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আলম বলেন, আমি শুনেছি সড়কটি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কাজ যেহেতু এখনো শেষ হয়নি তাই ঠিকাদারকে সড়কটি পুনঃনির্মাণ করে দিতে হবে। তবে সড়কের কাজ খুব ধীর গতিতে হচ্ছে। এই বছরের শেষের দিকে কাজটি শেষ হবে বলে আশা করছি।