আলাউদ্দিন শাহরিয়ার, বান্দরবান
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর হয়েও উচিং মং ৯ বছর ধরে প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদের চেয়ারে বসে রয়েছেন। তার পিতা ও ছোট ভাই সরাসরি বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত। কিন্তু বিএনপি পরিবারের সন্তান হলেও আওয়ামীলীগের লেবাস লাগিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদটি ব্যবহার করে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। দুর্নীতির টাকায় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বান্দরবান সদরের সূয়ালক ইউনিয়নে সরকারি অনুমোদন ছাড়ায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ইটের ভাটা। এছাড়াও নামে-বেনামে গড়ে তোলেছেন আরও সম্পদের পাহাড়। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা বলায় প্রতিবেদককে হুমকি দেন। যা ইচ্ছে লিখেন, কিছুই হবে না বলে চ্যালেঞ্জ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পার্বত্য জেলা পরিষদের কয়েকজন কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, উচিং মং মূলত কম্পিউটার অপারেটর পদের একজন কর্মচারী। প্রশাসনিক কর্মকর্তা অবসরের যাবার পর তিনি ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্ত তিনি ভারপ্রাপ্ত না লিখে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসবে লিখেন। এমনকি অফিসিয়াল কর্মকর্তার নামের তালিকার বোর্ডেও ভারপ্রাপ্ত লিখেনি এতোদিন। আপনারা তথ্য নিচ্ছেন জেনে তড়িঘড়ি করে নতুন করে ভারপ্রাপ্ত লিখেছেন বোর্ডে। খুবই সাম্প্রদায়িক এবং দুর্নীতিবাজ একজন কর্মচারী। ভাবসাব দেখায় বিসিএস ক্যাডারের মত। পার্বত্য জেলা পরিষেদর চেয়ারম্যান ও পার্বত্য মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন পরিচয়ে প্রভাব বিস্তার করে ইচ্ছেমত লোপাট করছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা উচিং মং বলেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদ ব্যবহার করতেছি’তো। এতে প্রতিষ্ঠানের কারোর কোনো সমস্যা নেই, আপনাদের এত মাথাব্যথা কেন? প্রতিষ্ঠান চাচ্ছে তাই আমি কাজ করতেছি। আপনাদের কে অভিযোগ করলো প্রমাণ দিন।
দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্পদতো অনেকেই করেছে, বললে অনেক কথায় বলা যায়। আমিও অনেক টাকা কামিয়েছি, অনেক সম্পদ করেছি লিখে দেন। কিন্তু প্রমাণ করতে পারবেন না চ্যালেঞ্জ করলাম।
এ বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা অবসরের পর থেকেই পদটি শূন্য। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন উচিং মং। ভারপ্রাপ্ত হলে ভারপ্রাপ্ত অবশ্যই লিখতে হবে, প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিখার সুযোগ নেই। ঐ পদে লোক চাচ্ছি। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধ রয়েছে এখানে। চাইলেও অনেককিছু করা সম্ভব হয়ে উঠেনা।
এই প্রসঙ্গে জানতে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।