অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই ॥
২শত ৫৯ বর্গকিলোমিটার আয়োতনের রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে রয়েছে হ্রদ এবং কর্ণফুলী নদী। অথচ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এই হ্রদ ও নদীবেষ্টিত উপজেলাটিতে নেই কোন সাঁতার শেখানোর প্রতিষ্ঠান। যার ফলে প্রায় প্রতিবছরই কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী অথবা হ্রদে ডুবে মারা যাচ্ছে সাঁতার না জানা শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তিরা। সাঁতার শেখানোর প্রতিষ্ঠান তো দূর অস্ত, নেই সাঁতার শেখানোর কোন আয়োজনও। আজ পর্যন্ত কাপ্তাইয়ের কোনও প্রতিষ্ঠানকেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
সম্প্রতি, কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদীতে গোসলে নেমে মারা যায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রিয়ন্ত দাশ ও শাওন দত্ত। তারা নদীতে ডুবির ৪২ ঘন্টা পর মরদেহ নদীতে ভেসে ওঠে। এরকম বিগত ৫ বছরে কাপ্তাইয়ের স্থানীয় বাসিন্দা ও বাইরে থেকে আসা পর্যটকসহ অন্তত ১১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাদের মধ্যে শিশু, কিশোর ও যুবকের সংখ্যায় বেশি। তাই কাপ্তাইয়ে এমন মর্মান্তিক ডুবির ঘটনা কমাতে সাঁতার শেখানোর কোন বিকল্প কিছু নেই বলে ধারণা করছেন বিশিষ্টজনরা।
কাপ্তাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দীন আজাদ জানান, কাপ্তাই উপজেলায় সাঁতার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করা খুবই জরুরি। একসময় কাপ্তাইয়ে শিক্ষার্থীদের সাঁতার শিখতে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিবছর সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো। এখনো স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের সাঁতার শিখতে উৎসাহী করতে হবে। এছাড়া কাপ্তাইয়ে একটি সুইমিং পুল করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এই বিষয়ে বেশি উপকৃত হওয়া যাবে।
কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ওমর ফারুক রনি বলেন, যেহেতু এই কাপ্তাই উপজেলা ঘিরে বিশাল জলরাশি, সুতরাং এখানকার মানুষের অবশ্যই সাঁতার জানাটা ভীষণ জরুরি। কিন্তু আমরা দেখি এই ব্যাপারে কোন আয়োজন বা উদ্যোগ নেই। খুব দ্রুতই কিছু একটা করা দরকার। যেন নদীতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা আর দেখতে না হয়।
কাপ্তাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার মোহাম্মদ হোসেন জানান, সাঁতার শেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যেহেতু আমরা কাপ্তাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন এডহক কমিটি হয়েছে। তাই সামনের সভায় সাঁতার প্রশিক্ষণের বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে।