নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপ্তাই
মৎস্য অধিদপ্তরের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় চারটি পাহাড়ি ক্রিক লেকে মৎস্য চাষ করে লাভবান হয়েছেন মৎস্য চাষীরা। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় আরোও ২৫টি ক্রিক নির্মাণের জন্য নির্বাচিত আছে বলে জানান সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার আরিফুর রহমান।
তিনি আরোও জানান, কাপ্তাই উপজেলায় গত ২০২০-২১ অর্থবছরে একটি এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে তিনটি ক্রিকে মাছ চাষ শুরু হয়েছিল। তৎমধ্যে ওয়াগ্গা ইউনিয়নে তিনটি ক্রিক এবং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নে একটি ক্রিকে সফলভাবে মাছ করা হচ্ছে। বর্তমানে এই সব ক্রিকে কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ প্রযুক্তির প্রর্দশনী মৎস্য স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ক্রিক সংশ্লিষ্ট সুফলভোগী মৎস্য চাষীদের তিন দিন মেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এর ফলে স্থানীয় জনগণের পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি মৎস্যচাষীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে।
কথা হয় ওয়াগ্গা ইউনিয়ন এর মৎস্যচাষী কিরণ তঞ্চঙ্গ্যার সাথে। তিনি বলেন, আমার ক্রিক নির্মাণের উপযুক্ত জায়গা ছিল। মৎস্য অধিদপ্তরের এই প্রকল্পের অর্থায়নে ২০২১ সালে আমার নিজস্ব জায়গায় দুই পাহাড়ের মাঝে বাঁধ নির্মাণ করে ক্রিক লেক তৈরি করে দেন। আমি উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর, কাপ্তাই হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এই ক্রিক লেকে মাছ চাষ শুরু করি। প্রকল্প হতে প্রথমে আমাকে মাছের পোনা এবং উপকরণ প্রদান করা হয়েছিল। বর্তমানে আমার এই ক্রিকে রুই জাতীয় মাছের চাষ করে লাভবান হয়েছি।
চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর রেশমবাগান তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ার মৎস্যচাষী সুদত্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে আমার নিজস্ব জায়গায় মৎস্য অধিদপ্তর ক্রিক বাঁধ ও ড্রেন নির্মাণ করে দেন। এরপর আমি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মৎস্যচাষ শুরু করি। পরে এটা প্রর্দশনী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে। বর্তমানে রুই জাতীয় মাছের চাষ করছি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল্লা আল হাসান বলেন, ক্রিক লেক উন্নয়নের মাধ্যমে মৎস্য চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে। পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় মানুষের প্রাণীজ প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় জনগণ নিত্য প্রয়োজনীয় ও সেচের কাজে এই ক্রিক লেকের পানি ব্যবহার করছেন। আমাদের অর্থনীতি এবং মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে এই ক্রিক লেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন পাশাপাশি ইকো সিস্টেমে অবদান রাখছেন।