নজরুল ইসলাম লাভলু ও অর্ণব মল্লিক
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালীতে হাতি হত্যার পর পুঁতে রাখা হাতির হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনের নামে চন্দ্রঘোনা থানায় বন্য প্রাণী আইন ২০১২ (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) ৩৬/৪১ ধারায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলাটি কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের আওতাধীন রাইখালী ইউনিয়নের কারিগর পাড়াস্থ রাইখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জাহেদুল ইসলাম বাদি হয়ে গত মঙ্গলবার মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মার্চ সন্ধায় রাইখালী ইউনিয়ন এর ডংনালা আমতলীস্থ চন্দনাইয়া কাঁটাপাহাড় এর নিচে ১)উষামং মারমা (৩৮), পিতা:- চায়থুই মারমা, গ্রাম:- ডংনালা, ইউনিয়ন:- রাইখালী, ২) উথোয়াই প্র“ মারমা (৪৬), পিতা:- কালাচান মারমা, একই এলাকার বাসিন্দা এই দুই জন সহ ১৫ থেকে ২০ জন দুষ্কৃতকারী একটি বন্যহাতিকে হত্যা করেছে। গোপন সূত্রে সংবাদটি জানার পর রেঞ্জ কর্মকর্তার নেতৃত্বে বন কর্মচারীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজাখুজির পর দেখতে পায় দুষ্কৃতকারিরা ওই বন্যহাতিকে হত্যা করে হাতির মাংস ভাগ ভাটোয়ারা করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে হাতির দেহের অংশ বিশেষ হাড়, নাড়ি, ভুঁড়ি, ছোয়ালের নিচের অংশ মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাপ্তাই উপজেলা পশু চিকিৎসা কেন্দ্রের সার্জন ডা. মো. জাকিরুল ইসলামকে জানালে তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরবর্তীতে মাটির নিচ হতে বন্যহাতির মাংস বিহীন পায়ের হাড় কিছু মাংস, মল, রক্তমিশ্রিত বালু ময়নাতদন্তের জন্য সংগ্রহ করেন। এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয় যে, গত ২৯ ফেব্রæয়ারি সকাল প্রায় ১০টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে যেকোন সময় হাতিটিকে হত্যা করা হয়। বিবাদীরা উক্ত ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত ছিলো। উক্ত তারিখে ঘটনার দিন বিবাদীগণ যোগসাজশ করে সংঘবদ্ধভাবে বন্যহাতিটি হত্যা করে দেহের অনান্য অংশ ভাগভাটোয়ারা করে নেন। যা বন্যপ্রাণী আইন (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) ২০১২ আইন লংঘন করেছে।
মামলার বাদী রাইখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জাহেদুল ইসলাম এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বন্যহাতি সুরক্ষায় আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি। কিন্তু রাইখালীতে হাতি হত্যার মতো জঘন্য কাজ যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে এই মামলাটি দায়ের করেছি। এবং অনেকটা নিশ্চিত হয়ে ঘটনায় জড়িত দুই ব্যক্তির নাম এবং সাথে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে চন্দ্রঘোনা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
এবিষয়ে চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনচারুল করিম জানান, বনবিভাগ থেকে হাতি হত্যার বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।