অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই ॥
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে বয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলছে পানির পরিমাণ। যার ফলে কাপ্তাই হ্রদের পার্শ¦বর্তী বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে কাপ্তাই বাঁধ সংলগ্ন জেটিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেটিঘাট এর নিচু এলাকায় পানি উঠে গেছে। এবং জেটিঘাট পার্শ্বস্থ গ্রীন রিভার ভিউ হোটেলসহ বেশ কিছু দোকানের অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া কাপ্তাই হ্রদে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পেলে আরো কিছু এলাকায় পানি ঢুকে যাওয়ার আশংকা করছে স্থানীয়রা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে গ্রীন রিভার ভিউ হোটেল এর পরিচালক মো. মুছা সওদাগর জানান, হ্রদের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার ফলে আমার প্রতিষ্ঠানের সামনের অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। যার ফলে হোটেল বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। অনেক পর্যটক ফোন দিলেও তাদের বুকিং ক্যানসেল করে দিয়েছি। এতে আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।
কাপ্তাই জেটিঘাট এলাকার বাসিন্দা রহমান আলী, সাবিনা খাতুন সহ বেশ কয়েকজন জানান, কাপ্তাই হ্রদে গত ১ মাস আগেও পানি স্বল্পতায় নৌ চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিলো। কিন্তু গত কিছুদিন পূর্বে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে লেকে পানির পরিমাণ বেড়ে গেছে। এবং বর্তমানে দিন দিন যে হারে পানি বাড়ছে এতে কাপ্তাই বাঁধের গেইট খুলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া তারা আরো জানান, ইতিমধ্যে কাপ্তাই লেকের বেশ কিছু নিচু এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। এবং জেটিঘাটেও আস্তে আস্তে পানির পরিমাণ বাড়ছে।
কাপ্তাই জেটিঘাট এর পল্টন এর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা শীতল সরকার জানান, কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এখন বিলাইছড়ি কিংবা রাঙামাটির সাথে নৌ চলাচল একদম স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এখন পুরোদমে কাপ্তাই লেকে লঞ্চ কিংবা ইঞ্জিনচালিত বোটগুলো চলছে। তবে পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়াতে এটি অনেকটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে অনেক নিম্মাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে ১০৭ দশমিক ৫৫ এমএসএল (মিনস সী লেভেল) পানি রয়েছে। যেখানে বছরের এইসময়ে পানি থাকার কথা প্রায় ১০২ এমএসএল। এছাড়া পানি ছাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, পানির লেভেল বিপদসীমা অতিক্রম না করা পর্যন্ত পানি ছাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে নিশ্চিত করেছে পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।