বিশেষ প্রতিবেদক, বান্দরবান
বান্দরবানের রুমা-থানচি দুটি উপজেলা সড়কে যাত্রীবাহি বাসসহ সবধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে দাবি পরিবহন শ্রমিকদের। গাড়ি বন্ধ রাখতে রুমায় পরিবহনের লাইনম্যান লুবপ্রæ মারমাকে মারধর করেছে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে রুমা ও থানচি উপজেলার জনসাধারণ। উপজেলাগুলোতে আটকা পড়েছে বেড়াতে আসা অসংখ্য পর্যটকও। রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, রুমা উপজেলার রিজুকপাড়া এলাকায় গত ১৩ ফেব্রæয়ারি পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারমা জনগোষ্ঠীর যুবক উহ্লা চিং (৩৫) গুলিবিদ্ধ আহত হয়। ঘটনার পরদিন রুমা বাজারে প্রতিবাদ কর্মসূচির পর বম জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়িতে ভাঙচুর হামলা চালায় রিজুকপাড়ার মারমা জনগোষ্ঠীরা। এতে বম জনগোষ্ঠীর নেতা বোমাং সার্কেলের মৌজা প্রধান হেডম্যান থামখাম বমসহ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বম জনগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বম জনগোষ্ঠীর ওপরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ। তবে সময়মত ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগে রোববার সকাল থেকে রুমা ও থানচি ২টি উপজেলায় বিভিন্ন সড়কে সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন কেএনএফ। এসময় রুমা বাসস্টেশন এলাকায় গাড়ি বন্ধ রাখতে পরিবহনের লাইনম্যান লুবপ্রæ মারমা’কে মারধর করে কেএনএফ। গুরুতর আহত অবস্থায় পরিবহন শ্রমিককে বান্দরবান জেলা সদরে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আন্তঃ মোটর সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুল আলম ও সুগন্ধা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অমল দাস জানান, রোববার সকাল থেকেই রুমা ও থানচি উপজেলা সড়কে যাত্রীবাহি বাসসহ সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অভ্যন্তরিণ সংঘাতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। লুবপ্রæ মারমা নামে এক পরিবহন শ্রমিককেও মারধর করা হয়েছে। যানবাহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয় জনসাধারণ ও বেড়াতে আসা পর্যটকরা। বিষয়টি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের অবহিত করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশের রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাজাহান জানান, সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে রোববার সকাল থেকেই। জনসাধারণের নিরাপত্তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে পুলিশ’সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সড়কের মধ্যখানে আটকে থাকা কয়েকটি যানবাহনের যাত্রীদেরও পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন জানান, যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আবাসিক হোটেল, পুলিশ ও স্থানীয় ট্যুর গাইডদের মাধ্যমে আটকা পড়া পর্যটকদের তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় পর্যটকদের নিরাপদে পৌঁছে দেয়া হবে। আলাপআলোচনার মাধ্যমে দ্রæত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যানবাহন চলাচল চালু করতে করতে কাজ করা হচ্ছে।