শ্যামল রুদ্র, রামগড় ॥
খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার প্রধান ডাকঘরে নতুন হিসাব খুলতে গেলে পোস্ট মাস্টারই গ্রাহকদের নিরুৎসাহিত করেন বলে নানান অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। গত দেড়/দুই বছরে পোস্ট অফিসে হিসাব না খোলার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ডাকঘরে ইন্টারনেট সমস্যা কিংবা সার্ভার জটিলতার অজুহাতে গ্রাহকদের নতুন হিসাব খুলতে নিরুৎসাহিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনিতেই এই প্রধান ডাকঘরটির ভবন আগে থেকেই সমস্যায় জর্জরিত। ভবনের পলেস্তরা খসে পড়েছে, দেয়ালে ফাটল ধরেছে আবার বৃষ্টি হলে পানি চুইয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় প্রধান কার্যালয়টি অন্যত্র স্থানান্তরের পাঁয়তারা করছে একটি মহল।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সঞ্চয়পত্র, মেয়াদি ও সঞ্চয়ী হিসাব, বিমাপত্রসহ নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে পোস্ট অফিসে গিয়ে বঞ্চিত হচ্ছেন। চলতি বছর কোনো ধরনের নতুন হিসাব খোলতে পারছেন না গ্রাহকরা। অনেকেই নতুন হিসাব খোলতে এসে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা অধ্যক্ষ ফারুকুর রহমান বলেন, রামগড়ের প্রধান ডাকঘর সংশ্লিষ্টরা কার্যালয়টি এখান থেকে সরিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছে। এখানে কোন ধরনের গ্রাহক সেবা নেই।
রামগড়ের প্রধান ডাকঘর নিজেদের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি চেপে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য জানাচ্ছে। বলছে এখানে নতুন গ্রাহক নেই, অথচ প্রতিনিয়ত অ্যাকাউন্ট করতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন লোকজন। সংবাদ কর্মী কাজী জসিমউদ্দিন বলেন, এ ধরনের খবর আমিও শুনেছি। সমস্যা সমাধানে ডাক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আন্তরিক উদ্যোগ দরকার। পুরোদমে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম দেখতে চায় এলাকাবাসী। ডাকঘরের পোস্টমাস্টার শহীদ কামাল আজাদ জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে সীমাবদ্ধতার কারণে গ্রাহকেরা কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সমস্যা উত্তরণের চেষ্টা চলছে। এখানে কম্পিউটারে কাজ করতে দক্ষ স্টাফ খুবই জরুরি। জানতে চাইলে, উপ-পোস্টমাস্টার জেনারেল (রাঙামাটি অঞ্চল) মো. তৈয়ব আলী বলেন, এমন হওয়ার কথা নয়। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এদিকে, রামগড় প্রধান ডাকঘরটি নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় জনবল ও আসবাব সামগ্রীর মারাত্মক অভাব এখানে। ভবনের বিভিন্ন অংশে বড় ধরনের ফাটল ও প্রতিনিয়ত পলেস্তরা খসে পড়ার পাশাপাশি ভেতরে বৃষ্টির পানি চুইয়ে ঢোকায় পুরো ভবনটিই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। পোস্টমাস্টার শহীদ কামাল আজাদ বলেন, বিপদের আশঙ্কার মধ্যেই এখানে দাপ্তরিক কাজকর্ম সারতে হচ্ছে। এ দুরবস্থার চিত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে মো. তৈয়ব আলী জানান, দেশের সবকটি ডাকঘরই মারাত্মক লোকবলের সঙ্কটে ভুগছে, বলা যায় এ সমস্যা দেশব্যাপী। ভবন ও প্রাচীর মেরামতের বিষয়ে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে, সম্প্রতি সামনের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে পুরোনো মরিচা ধরা লোহার রড ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার ছাদে সংরক্ষিত বেশকিছু লোহার রড ও একটি দামি ব্যাটারির হদিস নেই। বৈদ্যুতিক জেনারেটরটির বিষয়েও সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই কারো।