হেফাজত সবুজ ॥
‘খাদ্য হোক নিরাপদ, সুস্থ থাকুক জনগণ’ এই প্রতিপাদ্যে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস পালন করা হয়েছে। রবিবার সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আয়োজিত ও রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সহযোহিতায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, অতিরিক্ত পুরিশ সুপার মারুফ আহম্মেদ, কৃষি অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. মনিরুজ্জামন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক সৌরভ রায়সহ বিভিন্ন দপ্তরে কর্মকর্তা, হোটের, মোটেল, কটেজ মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জেলাা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, খাদ্য এমন একটি উপাদান যা উৎপাদন, সংরক্ষণ ও গ্রহণে পর্যায়ে কোনও ত্রুটি হলে তার প্রভাব সরাসরি আমাদের শরীরে পড়ে। তাই সকলকে খাদ্যের উৎপাদন ও সংরক্ষণে সচেতন হতে হবে। জেলার প্রতিটি হোটেলকে অবশ্যই মানসম্মত ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্য প্রস্তুত ও পরিবেশন করতে হবে। এতে কোনও অনিয়ম হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সামনে পবিত্র রমজান মাসের খাদ্যে কোনওপ্রকার ক্ষতিকর রং ব্যবহার না করার অনুরোধ জানানো হয়। নিরাপদ খাত্যের জন্য ফেব্রুয়ারি থেকেই নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমরা জরিমানা করে রাজ কোষাগার ভরাতে আসিনি। সরকারের টাকার অভাব নেই। আমাদের চাওয়া হলো জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। রাঙামাটিতে মানসম্মত খাবার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, রাঙামাটিতে প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক আসেন। তাঁরা আমাদের কাছে সোনার হাঁস। তাদের বিষয়ে সকলকে যতœশীল হতে হবে। তাদের যদি আমরা পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করতে না পারি, তাহলে তারা আর আসবে না। সাথে মূল্যটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। পর্যটক নিয়ে এই জেলায় গলাকাটা ব্যবসা করতে দেয়া হবে না। আমার কাছে বেশ কিছু অভিযোগ আছে, বিশেষ করে সিএনজি অটোরিকশা ও ট্যুরিস্ট বোট নিয়ে। খুব শীঘ্রই তাদের নিয়েও বসবো।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, রাঙামাটির স্থানীয় খাবারের বেশ সুনাম রয়েছে। পর্যটকরাও এর স্বাদ নিতে চায়। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই খাবারের প্রচারণা করেন না। বিশেষ করে চিকেন ইন ব্যাম্ব, ফিশ ইন ব্যাম্বসহ বেশ কিছু চমকপ্রদ খাবার আছে। এগুলো দেশের আর কোথাও পাওয়া যায় না। কেন আপনারা এই সুযোগটা নিবেন না? বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভিন্ন ভিন্ন খাবারে জন্য বিখ্যাত। সে সব খাবার খাওয়ার জন্য পর্যটকরা সেখানে ভিড় করেন। তাহলে আমাদের এসব স্থানীয় খাবার খেতে কেন পর্যটকরা আসবে না। তবে এসব স্থানীয় খাবার রান্নার ক্ষেত্রে আমাদের একটু সচেতন হতে হবে। আমাদের ট্রাইবেল কমিউনিটি ঝাল বেশি খায়। ফলে সেভাবেই ট্রেডিশনাল রান্না করা হয়। যা পর্যটকরা ঝালের জন্য খেতে পারেন না। তাই সেভাবে ঝাল স্থানীয় খাবার রান্না না করে ঝাল কমিয়ে রান্না করলেই তারা খেতে পারবেন। পাশাপাশি পরিবেশনের ক্ষেত্রেও নান্দনিকতা আনতে হবে। আশা করছি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আমার এই পরামর্শ কাজে লাগাবেন।
ডিসি আরও বলেন, উসাইতে আধুনিক অডিটরিয়াম হচ্ছে, সেখানে সিনেপ্লেক্স থাকবে। আমি শিল্পকরা একাডেমির মহাপরিচালক মহোদয়কে অনুরোধ করেছি সেই হলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে রাঙামাটির বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতির অনুষ্ঠান করা হবে। যেখানে পারর্ফম করা শিল্পীদের সম্মানীর ব্যবস্থা করা হবে। এতে শিল্পীদের কর্মসংস্থানে পাশাশাপি পর্যটকদের সান্ধ্যকালীন বিনোদনের ব্যবস্থাও হয়ে যাবে। সাথে তারা পাহাড়ে সমৃদ্ধ ও বৈচিত্রময় সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। টিকেট কেটে এই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পর্যটকদের কোনও আপত্তি থাকার কথা নয়।
নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের কার্যক্রমে সহায়তার পাশাপাশি জরিমানার নিউজ প্রচারের সাথে সাথে মানসম্মত খাদ্য প্রস্ততকারী রেস্তোরাঁর যে তালিকা প্রস্তুত করা হয় তা জেলা প্রশাসনকে দেয়ার নির্দেশ দিয়ে ডিসি বলেন, এসকল প্রতিষ্ঠাকে জেলা প্রশাসন থেকে সম্মাননা প্রদান করা হবে, যাতে সবাই অনুপ্রাণিত হয়।