ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই ইউনিয়নের দুর্গম ৩নং ওয়ার্ডের কাপ্তাই-বিলাইছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী গাছকাটা ছড়া এবং গোলকধন পাড়া। কাপ্তাই লেকের পাশে অবস্থিত এই দুই পাড়া। কাপ্তাই উপজেলার বারুদগোলা মৌজার অধীন এই দুই পাড়ায় প্রায় ৩ শত পরিবারের বসবাস। অধিকাংশ পরিবার চাকমা এবং তঞ্চঙ্গ্যা অধিবাসী। জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল এদের জীবন জীবিকা। কিন্তু এই পাড়ায় আসা যাওয়া নেই কোন সড়ক। কাপ্তাই উপজেলা সদর কিংবা বিলাইছড়ি উপজেলাতে চলাচলে লোকজন মানুষের ক্ষেত, ছড়া এবং পাহাড় বেয়ে আসছেন বছরের পর বছর। আর বর্ষা মৌসুম হলেও তো কথাই নাই। কোনভাবে চলাফেরা করা দায় হয়ে যায়। কৃষকরা তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে আশেপাশে কোন বাজারে যেতে পারেন না কাদামাটির জন্য। সেই সাথে চলাচলের পথে পানি জমে যায়। এই দুই পাড়ার অভ্যন্তরে ৩ কি: মি: সড়কের জন্য বছরের পর বছর এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গোলকধন পাড়ার বাসিন্দা ইন্দ্রজিত চাকমা, জটিলেশ্বর চাকমা জানান, কাপ্তাই লেকের গাছকাটা সেনাবাহিনীর ক্যাস্পের ডান পাশ ধরে লেক হতে নেমে আমাদেরকে পাড়ায় যেতে হয়। কিন্তু এই ৩ কি: মি পথে নেই কোন স্থায়ী সড়ক। কোথায় কাদামাটি আবার কোথায় মানুষের ক্ষেত আর ছড়ায় উপর দিয়ে যেতে হয় আমাদের। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই।
গোলকধন পাড়ার কারবারি কন্যাদেবী তঞ্চঙ্গ্যা জানান, পাড়ার এই পথ দিয়ে কোন রকমে চলাচল করা যায় না। যদি পাড়ার কেউ অসুস্থ হয়, তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিতে আমাদের ঘন্টার পর ঘন্টা সময় পার করতে হয়। যদি সরকার এই সড়কটি নির্মাণ করে দেয়, তাহলে আমাদের কষ্ট লাগব হবে।
কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ভানুমতি চাকমা জানান, আমার ওয়ার্ডের এই এলাকার যাওয়ার রাস্তা নেই বললেই চলে। লোকজন মানুষের ক্ষেত, ছড়া এবং পাহাড় বেয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাফেরা করে। যদি এই এলাকায় একটি সড়ক নির্মাণ করা হয় তাহলে জনগণের দুঃখ লাগব হবে।
কাপ্তাই উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, উক্ত সড়কটির কোন রোড আইডি এলজিআইডিতে নেই, কিন্তু এটা যদি কারিগরপাড়া-বিলাইছড়ি উপজেলাতে যেই সড়কটি নির্মাণ হচ্ছে তার সাথে লিংক রোড হিসেবে সংযোগ করা যায়, তাহলে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব হবে।