অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই ॥
প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরে একজন গৃহবধূ থেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়নের মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা কামরুন নাহার আরজু। বর্তমানে তিনি নিজের হাতের বানানো বিভিন্ন খাবার বিক্রয় করে সাবলম্বী করে তুলেছেন নিজেকে।
সম্প্রতি সফল উদ্যোক্তা কামরুন নাহার আরজুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, একজন গৃহিনী থেকে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে আমার যেই বিষয়টা বার বার চিন্তায় আসতো সেটি হলো সমাজ বা সংসারে বোঝা না হয়ে আমাকে স্বাবলম্বী হতে হবে। বিশেষ করে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে তুলতে হবে। নিজে কিছু করতে চাই ও করে দেখাতে চাই এই বিষয়টা নিয়ে আমি খুব সিরিয়াস ছিলাম।
তিনি জানান, লেখাপড়া এবং সংসার দুইটায় নিয়ে একসময় ব্যস্ত সময় কাটতো। বিশেষ করে দুই সন্তানের জননী কামরুন নাহারের স্বামীর অনুপ্রেরণায় এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন সংসারের পাশাপাশি কিছু একটা করবেন তিনি। এর জন্য গত ৪ বছর পূর্ব থেকে নিজে রান্নার উপর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। যেখানে তিনি ঢাকা, চট্টগ্রামে গিয়েও বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি সরকারিভাবে ওঈও (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈঁষরহধৎু ওহংঃরঃঁঃব) থেকে খবাবষ- ১ ্ ২ এবং বেকারী, পেস্ট্রির ওপর কোর্স কমপ্লিট করেছেন। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে “ই-বাণিজ্য করবো নিজের ব্যবসা গড়বো” এবং বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টভিটি প্রকল্প, ইঝঈওঈ আয়োজিত মেলা ও ঊহঃৎবঢ়ৎবহঁৎ উবাবষড়ঢ়সবহঃ চৎড়মৎধস এ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে সুনামের সঙ্গে সনদপত্র অর্জন করেছেন।
এরপর থেকে তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি নিজে রান্নার পাশাপাশি জন্মদিনের কেক, হরেক রকম পিঠাপুলি, কুকিস, ফ্রোজেন ফুডস, কাচ্চি বিরিয়ানিসহ নানা পদের খাবার অর্ডার নিয়ে যথেষ্ট সুনামের সাথে তা বিক্রয় করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। সেইসাথে তিনি তাঁর এই কাজে আরো কয়েকজন মহিলাকে যুক্ত করে তাঁদেরও আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন।
পরবর্তীতে তিনি আরো সফলতা পাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের এলাকায় বসে না থেকে চট্টগ্রাম শহরের দেওয়ান বাজারে চলে আসেন। এবং সেখানেও তিনি বিভিন্নমুখী রান্নার সুস্বাদু খাবার অর্ডার নিয়ে বিক্রয় করছেন। বর্তমানে তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় নিজস্ব একটি পেইজ রয়েছে আরজু’স কুক হাউস। সেখান থেকে অর্ডার নিয়ে এবং তা বিক্রয় করে বর্তমানে তিনি বেশ স্বাবলম্বী হয়েছেন।
কামরুন নাহার আরজু আরো জানান, তিনি সকলের সহযোগিতা নিয়ে আরজু’স কুক হাউজের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে দিতে চান। এবং ভবিষ্যতে একটি নিজস্ব রেস্টুরেন্ট প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা আছে তাঁর। যেখানে দেশি-বিদেশি নানা পদ খাবার তৈরির পাশাপাশি ট্রেনিং সেন্টার খুলে সেখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন বলে আশা রয়েছে তাঁর।