আরমান খান,লংগদু
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদুতে সেতু নির্মানের ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে রয়েছেন চারশতাধিক পরিবার। সেতুটি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ঝর্ণাটিলা গ্রামের সাথে লংগদু সদরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত ঝর্ণাটিলা গ্রামের সাথে লংগদু উপজেলা সদরের যোগাযোগের জন্য সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এবং সে বছরের এপ্রিলে রাঙামাটি আসনের বর্তমান সাংসদ দীপংকর তালুকদার আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সেতুটির ঝর্ণাটিলা অংশে পাঁচটি পিলারের কিছু অংশের কাজ করা হয়েছে। তবে লংগদু অংশে কোনো কাজ শুরু হয়নি। এই পথে চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। তবে বর্ষায় কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়তে শুরু করায় কচুরিপানা এসে নৌকা চলচলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতে দূর্ভোগ নেমে এসছে।
খেয়াঘাটের মাঝি ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঝর্নাটিলা গ্রামে চার শতাধিক পরিবারের বসবাস। প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী লংগদুর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য এই পথে যাতায়াত করে। লেকে পানি বেড়ে গেলে নৌকা একমাত্র চলাচলের ভরসা। এছাড়াও এই গ্রামে উৎপাদিত ফসল ও শাক সবজি বাজারে নিতে হলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় চাষীদের। পাশাপাশি কেউ অসুস্থ হলেও রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
স্থানীয়রা আরো বলেন, সরকার সারা দেশে অসংখ্য সেতু ও রাস্তার কাজ করেছে কিন্তু এই সামান্য একটা সেতুর কাজ করতে এতো সময় কেন লাগছে এটা রহস্যজনক। আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দকেও অনেকবার বলেছি সবাই শুধু আশ^াস দিয়েছে কিন্তু কোনো ফলাফল দেখতে পাচ্ছি না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহাম্মেদ বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে ছয় বছরেও গুরুত্বপূর্ণ একটা সেতুর কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। সেতু নির্মাণে জেলা পরিষদ প্রতি অর্থ বছরে বরাদ্ধ দেয় কিন্তু সেতুর কাজে কোনো অগ্রগতি নাই। শুনেছি এ বছরেও কিছু টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জেলা পরিষদ। এই বরাদ্ধ একসাথে দেওয়া হলে ঠিকাদার কাজটিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে পারতো।
লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেতুর বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন এই অর্থ বছরে কিছু বরাদ্ধ দিবেন। আশা করছি বরাদ্ধ পেলে ঠিকাদার নির্মাণ কাজটি শুরু করতে পারবে। সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঝর্নাটিলা এলাকাটি উপজেলা সদরের কাছে হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য আছমা বেগম বলেন, সেতুটির বিষয়ে চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে। সেতুটি নির্মানের কাজ প্রক্রিয়াধীর আছে এবং এই অর্থবছরে কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শিঘ্রই সেতুটির বাকি নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
সেতু নির্মানের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা দিয়েও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। নানাভাবে চেষ্টা করেও খোঁজ মেলেনি ঠিকাদারেরও।
ছয় বছরেও শেষ হয়নি ঝর্নাটিলা সেতুর কাজ !
Previous Article‘নৌকার বিজয়ে বাঘাইছড়িতে ভুমিকা রাখবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ’
Next Article ইয়াবাসহ যুব মহিলা লীগ নেত্রী অন্তরা আটক
এই বিভাগের আরও সংবাদ
সম্পাদকঃ ফজলে এলাহী
নির্বাহী সম্পাদকঃ হেফাজত সবুজ
প্রধান কার্যালয়
পৌর মার্কেট, দ্বিতীয় তলা, পৌরসভা এলাকা, রাঙামাটি-৪৫০০
ফোন : ০১৭১৮৫৪৭৮৭৮, ০১৬১৮৫৪৭৮৭৮।
ইমেইল : pahar24news@gmail.com
পাহাড়ের সংবাদ
আমাদের সম্পর্কে
© 2024 All Rights Reserved pahar24.com. Developed by MicroWeb Technology.