বিশেষ প্রতিবেদক ॥
বান্দরবানে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, ফ্যাসিস্টদের রাষ্ট্র বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলাসহ জনবান্ধব বিভিন্ন দাবিতে বিএনপির জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার স্থানীয় ঐতিহাসিক রাজারমাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবউন নবী খান সোহেল বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে চান, যারা এধরণের অদ্ভুদ প্রস্তাব দেন, তাদের জিজ্ঞেস করতে চাই, বাবার আগে কি সন্তানের জন্ম হয়? উদ্ভট প্রস্তাব দিবেন না। মাঝে মধ্যে আপনাদের কর্মকান্ড দেখে মনে হয়, আপনাদের ওপরে জঙ্গি ভূত ভর করেছে, এই জঙ্গিরা কিন্তু নির্বাচনে বিশ্বাস করে না, এরা হচ্ছে রগ কাটায় বিশ্বাস করে।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ইঙ্গিত করে বলেন, ওরা নির্বাচনের কথা বললেও নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইবে, নির্বাচন নষ্ট করে দিতে চাইবে। আপনারা যদি তাদের খেলায় নিজেদের শরিক করেন, তাহলে ভয়ঙ্কর পরিণতি কিন্তু অপেক্ষা করছে। বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুুত, তেমনি আন্দোলনের জন্যও প্রস্তুত। এখনও পর্যন্ত আমরা মনে করি, ড.ইউনুস সাহেব এসেছেন, একজন ভালো মানুষ, পরিচ্ছন্ন নির্বাচন দিবেন, আগামীতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়াটাই ভালো। কিন্তু আমরা যদি দেখি, আপনারা ঐ জঙ্গি ভূতের খপ্পরে পড়ে, নির্বাচন দিতে কোনো তালবাহানা করছেন, তাহলে ১৬ বছরের ভোটের অধিকার বঞ্চিতদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে বিএনপি আবারও রাজপথে আন্দোলনে নামবে।
প্রধান অতিথি যুগ্ম মহাসচিব হাবিবউন নবী খান সোহেল আরও বলেন, আমরা পাহাড় সমতল যেখানেই যারা থাকি, মারমা, চাকমা’সহ বিভিন্ন জাতীগোষ্ঠী আমরা সবাই বাংলাদেশী, আমরা সকলে আজ ঐক্যবদ্ধ। আপনাদের মেয়ে হাসিনা পালিয়ে আপনাদের কাছে চলে গেছে, সীমান্তের ওপার থেকে আর বাংলাদেশকে আঙুলের ইশারায় চালানো যাবে না। এখন সীমান্তে আর কোনো বাংলাদেশীদের হত্যা করা যাবে না, যারা হত্যার চেষ্টা করবেন, তাদের ছেড়ে দেয়া হবে না। আর কোনো ফেলানী সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা যাবে না, যদি তেমন কোনো হয়, তাহলে হত্যাকারীদেরও কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ভোটচোর বীর বাহাদুরের গোটা পরিবার দুর্নীতিবাজ। ফ্যাসিস্ট সরকারের মন্ত্রী বীর বাহাদুর এবং মন্ত্রীর সম্বন্ধি(স্ত্রী’র বড় ভাই) আওয়ামীলীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা’কে গ্রেফতার করতে হবে। সংস্কারের নামে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কালক্ষেপণ করছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো নির্বাচন বিএনপি হতে দেবে না। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, নয়ত বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না।
জেলা বিএনপির আহবায়ক সাচিং প্রু জেরীর সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে জাতীয় নির্বাহী কমিটির উপজাতিয় বিষয়ক সম্পাদিকা মাম্যাচিং, চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-উর রশিদ, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাবেদ রেজা, বিএনপির সিনিয়র নেতা জাহাঙ্গীর আলম, জসিম উদ্দিন তুষার বক্তব্য রাখেন।
এদিকে জনসভাকে ঘিরে বান্দরবান জেলার সাতটি উপজেলা, ৩৪টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা শাখা বিএনপি’সহ অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা যোগদান করেন। দীর্ঘ সাতটি বছর পর নবগঠিত আহবায়ক কমিটি ঘোষণার পর বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির উপজাতীয় বিষয়ক সম্পাদিকা মাম্যাচিং এবং বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রাজপুত্র সাচিং প্রু জেরী দু’ভাগে বিভক্ত নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়েছে জনসভাস্থলে। খন্ডখন্ড মিছিলে জনসভাস্থল পরিনত হয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মিলনমেলায়।