দীঘিনালা প্রতিনিধি ॥
জেলার দীঘিনালায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে অতর্কিতে হামলা করে ৫০ বছরের বৃদ্ধা এবং তাঁর কোলে থাকা ১৪মাস বয়সী নাতির মাথা ফাটিয়েছে প্রতিপক্ষ। ঘটনাটি শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের বড়মেরুং এলাকায়।
আহত সাফিয়া বেগম (৫০) বড়মেরুং গ্রামের মৃত মোবারক হোসেনের স্ত্রী এবং তাঁর কোলে থাকা মেয়ের ঘরের নাতীন মিনহাজ (১৪মাস)। ঘটনার পর পর স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এবং পরদিন রবিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
দীঘিনালা হাসপাতালে ভর্তির সময় কর্তব্যরত উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রমেশ চাকমা চিকিৎসা দেন। প্রমেশ চাকমা জানান, সাফিয়া বেগমের মাথায় ১০টি সেলাই এবং শিশু মিনহাজের মাথায় ৭টি সেলাই করতে হয়েছে।
আহত সাফিয়া বেগম জানান, প্রতিবেশি মৃত আঃ খালেকের ছেলে কামাল হোসেনেরে (৪০) সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা হলে সাফিয়ার পক্ষে রায় হয়। এরপর কামাল আপিল করেছেন, যা এখনো বিচারাধীন।
সাফিয়া ঘটনা সম্পর্কে জানান, ঘটনার আগে তাঁর নাতি কান্না করছিল। তাই তিনি নাতিকে কোলে নিয়ে পাশের দোকানে যাচ্ছিলেন। দোকানে যাওয়ার সড়কটি কামালের বাড়ির সামনে দিয়ে। কামালের বাড়ির কাছে পৌছতেই হটাৎ কাঠের লাকড়ি দিয়ে কামাল এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। তখন তিনি কোলে থাকা নাতীকে নিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরেন। তখন তাদের চিৎকারে স্বজন এবং পার্শ্ববর্তীরা উদ্ধার করে।
শিশু মিনহাজের বাবা আঃ সালাম (২৮) একই ইউনিয়নের মধ্যবেতছড়ির বাসিন্দা এবং স্থানিয় একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন। সালাম জানান, ঘটনার আগেরদিন শিশু সন্তান নিয়ে তাঁর স্ত্রী মায়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন, পরের দিন এমন ঘটনার শিকার হলো তাঁর দুধের শিশু। সালাম আরো জানান, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে; চিকিৎসা শেষে ফিরার পর মামলা দ্বায়ের করা হবে।
অপরদিকে অভিযুক্ত কামাল হোসেন জানান, কারো ছাগলে তাঁর পুঁইশাক গাছ খাওয়ার জন্য তিনি বকাবকি করছিলেন। তখন সাফিয়া তাঁকে বকা হচ্ছে মনে করে কামালকে মারতে আসেন। এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তির কারণে পড়ে গিয়ে কোথাও লেগে নানি এবং নাতীর মাথা ফাটতে বা কাটতে পারে। আক্রমন করে মারার অভিযোগ মিথ্যা বলে জানান কামাল।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার মো. হোসেন জানান, ঘটনার পর তিনি নিজে গাড়িতে তুলে তাদের হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। মারামারিতে কামাল সামান্য আহত হলেও বৃদ্ধা নারী এবং দুধের শিশুর মাথা ফাটানো এটি মানার মতো নয়। নিজেরা উত্তেজিত না হয়ে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করলে অনেক ভাল হতো।