আরমান খান, লংগদু
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম’র ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা করেছে লংগদু সরকারী মডেল কলেজ। সোমবার সকালে কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আজগর আলী।
সভায় আলোচকরা বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ২৪ মে ১৮৯৯ সালে ভারতের চুরুলিয়ায় জন্মগ্রহন করেন। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রধান বাঙালি কবি ও সঙ্গীতকার। তার মাত্র ২৩ বছরের সাহিত্যিক জীবনে সৃষ্টির যে প্রাচুর্য তা তুলনারহিত। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও তার প্রধান পরিচয় তিনি কবি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম শুধু বাংলাদেশের নয়, এই উপমহাদেশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বাংলা সাহিত্যের সকল ক্ষেত্রে তাঁর প্রতিভার বিচরণ অবিস্মরণীয় ।
তিনি শুধু একজন কবি বা লেখকই ছিলেন না। তিনি ছিলেন দেশপ্রেমিক এক যোদ্ধা। তাঁর জন্মের শত বছর পরেও তিনি আমাদের সাহিত্য জগতে উজ্জ্বল তারকা হয়ে বেঁচে আছেন।
বক্তারা আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। কবির সঙ্গে তার দুই ছেলে সব্যসাচী ও অনিরুদ্ধ এবং তাদের স্ত্রী-সন্তানদেরও নিয়ে আসা হয়। তারা তেজগাঁও বিমানবন্দরে অবতরণ করলে আপামর জনতা তাকে সেখানে বিপুল সংবর্ধনা প্রদান করে। সেদিনই রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে কবিকে দেখতে যান। ধানমন্ডিতে কবির বসবাসের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি বাড়ি দেওয়া হয়। বাড়িটির নাম দেওয়া হয় ‘কবি ভবন’। সেখানে কবিকে রাখা হয় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়। কবি ভবনে প্রতিদিন জাতীয় পতাকা উড্ডীন থাকত। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে নজরুলকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে সরকারি আদেশ জারি করা হয়। একই বছর ২১ ফেব্রুয়ারি কবিকে ‘একুশে পদক’ দেওয়া হয়। নজরুলকে দেওয়া ‘জগত্তারিণী’ স্বর্ণপদক, ‘পদ্মভূষণ’ উপাধি, ‘ডি-লিট’ উপাধি, ‘একুশে পদক’ প্রভৃতির প্রামাণ্য দলিল পাওয়া যায়। ভারত থেকে কবিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা, তার জন্য ‘কবি ভবন’ বরাদ্দ দেওয়া, তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ করতে যাওয়া প্রভৃতির প্রমাণ পাওয়া যায়। বাংলার এই মহাপুরুষ ১৯৭৬ সালের ২৯ আগষ্ট মৃত্যুবরণ করেন। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।
প্রভাষক আবাদুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রভাষক খোন্দকার হাসান আলী, প্রভাষক অমিত কুমার দাশ, প্রভাষক নুর মোহাম্মদ, এইচএসসি ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন , এইচএসসি ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ ইব্রাহীম প্রমূখ।