ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই
পার্বত্যাঞ্চলে মারমা জনগোষ্ঠীর লোকজন সংঘবদ্ধভাবে বসবাস করে আসছে। তাদের আমিষের চাহিদা পূরণ করার জন্য তাঁরা ছড়া ও ঝিরিতে য়াহ্কসে দিয়ে (বাংলা অর্থ রুই) মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি, শামুক, ইত্যাদি ধরে থাকেন। এই বিষয়কে উপজীব্য করে মারমা জনগোষ্ঠীর শিল্পীরা মাছ ধরার নৃত্য পরিবেশন করে আসছেন।কোন কোন দলে ৪ হতে ৮ জনের মতো নৃত্য শিল্পী থাকে। তাদের সাংগ্রাই উৎসবসহ বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে সাধারণত এই নৃত্যটি পরিবেশন হয়ে থাকে। ইদানীং এই মাছ ধরার নৃত্যটি দর্শক শ্রোতার কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের কালচারাল অফিসার পার্বত্যাঞ্চলের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী চথুইপ্রæ মারমা বলেন, মূলত এটি মারমাদের একটি জীবন ধারার নৃত্য। মারমা লোকজন ছড়া কিংবা ঝিরিতে য়াহ্কসে( রুই) দিয়ে আমীষ জাতীয় খাবার ধরে থাকে, তাই ২০০০ সাল হতে আমি এই বিষয়ের ওপর একটি গান লিখি এবং সুর করি। আমার কথা ও সুরে” লা লাহ্ গাইমে লা লাহ্গাইমে ঞি ঞা প্য প্য পাহ্ পাহ্ হে হে, ঞি ঞি ঞা ঞা প্য প্য পা পা লাহ্ মে রংমা লা লাহ্ফো লাহ্” – এই গানটির মাধ্যমে মারমা শিল্পীরা এই নৃত্য পরিবেশন করে আসছেন। প্রথম ঢাকায় আজ হতে ২০ বছর আগে ‘আদিবাসী দিবসে’ এই নৃত্যটি পরিবেশন হয়েছিল। এটা এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গত ১৫ এপ্রিল রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চিং¤্রং বৌদ্ধ বিহার এর আয়োজনে সাংগ্রাই রিলংপোয়ে উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই মাছ ধরার নৃত্য পরিবেশন করেন চিৎমরম এর মৈদং পাড়া দল। তারা হলেন-উঞোচিং মারমা, উম্যাসিং মারমা, মাসিনুং মারমা, ইসিং মারমা, মিমে মারমা ও উমেপ্রু মারমা। এসময় তাঁরা এই প্রতিবেদক বলেন, আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে মারমা জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই নৃত্য পরিবেশন করে আসছি। দর্শকরা বেশ উপভোগ করে এই নৃত্য।
কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির নির্বাহী কমিটির সদস্য জনপ্রিয় মারমা শিল্পী মংচাই মারমা বলেন, মারমা জনগোষ্ঠীর অনেকগুলো নৃত্যের মধ্যে মাছ ধরার নৃত্যটি ইদানীং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমাদের শিল্পীরা রুই নিয়ে এই নৃত্য পরিবেশন করে থাকেন।