রাঙামাটির জুরাছড়ির উপজেলার মৈদং এলাকার দুর্গম মৌন আদাম এলাকায় রাঙাচোগা চাকমা (৩৫) নামের এক ব্যক্তি চিতা বাঘের আক্রমনের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।
আক্রান্ত ব্যক্তির মামাত ভাই শান্তি কুমার চাকমা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তার ভাই রাঙাচোগা চাকমা সোমবার (৩ মার্চ)ভোর চারটার দিকে নিজের মুরগী ঘর মেরামতের জন্য বাড়ির পাশের জঙ্গল থেকে গাছ সংগ্রহ করতে গেলে ‘বাঘের’ কবলে পড়েন। তার মুখের বাম পাশের একাংশ জখম হয়েছে। সেই সঙ্গে বাম কান ও চেখের একটা অংশ এবং হাতের তালু ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। এছাড়া শরীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় জখম হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে বাঘ তাকে কামড় দিতে পারেনি, তার আগেই রাঙা চোগার চিৎকারে ‘বাঘ’ তাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। তবে আক্রমনকারি বাঘটি কি ধরণের সেই সম্পর্কে নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
তিনি আরো বলেন, দুর্গম এলাকা হওয়ায় চিকিৎসার জন্য রাঙা চোগাকে কাঁধে করে দুই ঘণ্টা হেঁটে ফকিরাছড়া গ্রামে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে এক স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক রাঙাকে চিকিৎসা দিয়েছেন।
তবে রাঙামাটি রাঙামাটি উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী ও রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুপ্রিয় চাকমা আক্রান্ত প্রাণীটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই জানিয়ে বলছেন, সম্ভবত প্রাণীটি লেপার্ড বা চিতাবাঘ হতে পারে।
রাঙামাটির বন বিভাগের উপ বন সংরক্ষক ও উত্তর বন বিভাগের বিভীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলছেন, যদি আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি কথা বলতে পারতাম এবং প্রাণীটির পায়ের ছাপ দেখতে পেতাম,তাহলে নিশ্চিত হওয়া যেনো সেটি কোন ধরণের বাঘ। যা বিবরণ শুনেছি,তাতে মনে হয়েছে এটি চিতাবাঘা হতে পারে। কারণে পাহাড়ে চিতাবাঘ এখনো আছে। কিন্তু রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্বের কোন খবর আমাদের জানা নেই। আর যদি থাকেও সেটি সাজেকের বাম দিকে ভারত সংলগ্ন গভীর বনে থাকতে পারে। এটার আক্রমনের ধরণ শুনে মনে হচ্ছে এটা লেপার্ড বা চিতাবাঘ।
সুন্দরবনে বাঘ শুমারীর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুপ্রিয় চাকমা বলেন, এটা চিতাবাঘ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বেঙ্গল টাইগার পার্বত্য চট্টগ্রামে থাকার কোন তথ্য এখন অবধি নেই।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডাঃ নূয়েন খীসা,বাঘের আক্রমনে আহত কোন রোগী চিকিৎসার জন্য তাদের কাছে আসেনি বলে নিশ্চিত করে বলেছেন, এইরকম একটা ঘটনা শুনেছি। কিন্তু কেউ আমাদের কাছে তো চিকিৎসা নিতে আসেনি। তবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি ওই ব্যক্তির আঘাত তেমন গুরুতর কিছু নয়,তিনি স্থানীয়ভাবে একজন পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং নিজ বাড়ীতেই আছেন।