মিশু মল্লিক
এবিএফ ইন্টারকন্টিনেন্টাল সুপার লাইটওয়েট প্রতিযোগিতা -২০২৩ এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করায় রাঙামাটির সন্তান বক্সার সুর কৃষ্ণ চাকমাকে সংবর্ধনা দিয়েছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল্লাহ আল মাহমুদের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস.এম ফেরদৌস ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাসরিন সুলতানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ ইমরান, কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল আমিন, রাঙামাটি সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন আক্তার, রাঙামাটি রোভার স্কাউটের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল আবছার, রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আজম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সুর কৃষ্ণ চাকমা দেশের জন্য এক অসামান্য কৃতিত্ব বয়ে এনেছেন। একজন খেলোয়াড়ের মাধ্যমে একটি দেশ খুব সহজেই বিশ্বের কাছে পরিচিতি লাভ করতে পারে। সুর কৃষ্ণ চাকমা রাঙামাটির দুর্গম একটি উপজেলা থেকে উঠে এসে বক্সিংয়ের মত একটি অপ্রচলিত খেলায় এতটা সুনাম বয়ে এনেছে। এটি তার কমিউনিটি, রাঙামাটি জেলাসহ সমগ্র দেশের জন্য গৌরবের।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা পাহাড়ের আনাচে কানাচে সুর কৃষ্ণ চাকমারা মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিভাদের তুলে আনতে চাই। তাদের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা সবসময়ই করে যাবে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।
বক্সার সুর কৃষ্ণ চাকমা তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তার বক্তব্যে বলেন, আমি ২০০৭ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হই। আমার ইচ্ছে ছিল ফুটবলার হবো। কিন্তু একসময় আমার বক্সিংয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। কিন্তু তখন বাংলাদেশে প্রফেশনাল বক্সিং হতো না। বক্সিংয়ে ক্যারিয়ার নেই বলে অনেকে আমাকে নিরুৎসাহিত করতো। এরপর ২০১৩ সালে আমি অষ্টম বাংলাদেশ গেমসে অংশগ্রহণ করি। সেখানে সেনাবাহিনীর একজন বক্সারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হই। এরপর থেকেই আমার বক্সিংয়ের জার্নিটা পরিবর্তন হতে শুরু করে। ২০১৪ সালে আমি কমনওয়েলথ গেমসে খেলতে যাই। এরপর ২০১৫ সালে লন্ডনে যাই ৬মাসের উচ্চতর ট্রেনিংয়ের জন্য। এরপর আরো বিভিন্ন গেমসে অংশগ্রহণ করি। ২০১৯ সালে ভারতের হরিয়ানায় যাই উচ্চতর ট্রেনিংয়ের জন্য। সেখানে দুটি ম্যাচ খেলি এবং জয়লাভ করি। ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রফেশনাল বক্সিং শুরু হয়। আমি আরো ৪/৫ বছর খেলবো। আমার ইচ্ছে, আমি আমার বক্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিব।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সুর কৃষ্ণ চাকমাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এরপর তাকে লাল-সবুজ উত্তরীয় পরিয়ে তার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন কর্মকর্তারা।