জিয়াউল জিয়া ॥
কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির কারণে ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর কাঠের পাটাতন। এতে পর্যটকদের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকরা। পাটাতনের ওপর পানি উঠেছে প্রায় ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি, যা বেড়েই চলছে। পানির চাপে অনেক স্থানেই খুলে গেছে পাটাতনের কাঠ। তা মেরামতে কাজ করছেন কর্তৃপক্ষ। আর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সেতুতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
কাপ্তাই বাঁধের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ১০৯এমএসএল(মিনস সী লেভেল)। কিন্তু সোমবার সকালে কাপ্তাই কর্ণফুলি জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য মতে, বর্তমানে হ্রদে পানি রয়েছে ১০৫ এমএসএল।
অন্যদিকে ডুবে যাওয়া সেতুতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ। লাগিয়ে দিয়েছে নোটিশ ও লাল পতাকা। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান হতে আগত পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ডুবন্ত সেতুতে। ঝুলন্ত সেতুর এমন অবস্থা দেখে হতাশ পর্যটকরা, আর এতে ক্ষতির আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. নাঈম উদ্দিন জানান, অনেক আশা নিয়ে রাঙামাটি বেড়াতে আসলাম। এসে দেখি ঝুলন্ত সেতুটি অনেকাংশে ডুবে আছে। হতাশা ছাড়া আর কিছুই বলার নাই। কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে নজর দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
নোয়াখালি থেকে একদল বন্ধু বেড়াতে একই সুরে কথা বলেন তারা। তারা জানান, বন্ধুরা মিলে মোটরসাইলে করে রাঙামাটিতে সকালে আসি। প্রথমেই এক বুক হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি। আগে জানলে আসতাম। শীতে যখন এসেছি তখন সেতুতে উঠে খুব মজা করি। সেই মজা নিতেই এসেছিলাম। এসে দেখি সেতু ডুবে আছে।
রাঙামাটি পর্যটন নৌ-যান ঘাটের ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. রমজান আলী জানান, পাহাড়ি ঢল নামার কারণে কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা বেড়েছে। এতে সেতুটি ডুবতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ছয় ইঞ্চি পানিতে ডুবে গেছে সেতুটি। এ কারণে সেতু দিয়ে পারাপার বন্ধ রয়েছে। তবুও কেউ কেউ ডুবে যাওয়া পাটাতন মাড়িয়ে সেতু পার হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এর ফলে ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হবে। ঝুলন্ত সেতু ডুবে যাওয়া সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান এই ব্যবসায়ী নেতা।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন রাঙামাটি শাখার ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন ডুবে গেছে। যার ফলে নিরাপত্তার বিবেচনা করে সেতুতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পানি কমে আসলে আবারও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।