শ্যামল রুদ্র, রামগড় ॥
রামগড়ের কমপাড়া গ্রামের ২৩ বছরের শিক্ষার্থী নাহিদ হোসেন ড্রাগন ফল চাষ করে লাখপতি হয়েছেন। স্থানীয় আবহাওয়া এবং মাটির উপযোগিতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের ৫০ শতক জমিতে ড্রাগন চাষ করে বার্ষিক আয় তিন থেকে চার লাখ টাকা উপার্জন করছেন তিনি।
নাহিদ হোসেন রামগড় সরকারি কলেজের বিএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নিজ বাগানে ড্রাগন গাছের পরিচর্যায় সময় দেন। তার বাগানে ৭-৮ ফুট উচ্চতার সিমেন্টের পিলারের পাশে ড্রাগনের গাছ রোপণ করা হয়েছে। পিলারগুলোর ওপর গাড়ি/ সাইকেলের পুরনো টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবে বাগানটি আয়তন ও কাঠামোগতভাবে সুসংগঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি নাহিদ হোসেনের বাগানে গিয়ে দেখা যায় ড্রাগনের পাকা ফলে বাগান ভরে গেছে। স্থানীয়রা তার বাগান পরিদর্শন করে ড্রাগন চাষ সম্পর্কে ধারণা নিচ্ছেন। যেসব আগ্রহী ব্যক্তি চারা সংগ্রহ করতে চান, তাদের নাহিদ সরাসরি চারা সরবরাহ করছেন।
নাহিদ হোসেন জানান, কয়েক বছর আগে রামগড় হর্টিকালচার সেন্টারের সহযোগিতায় তার বাবা আবুল কাশেমের উদ্যোগে ৩০টি পিলার ও ৯০টি ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করে বাগান শুরু করেছিলেন। সঠিক পরিচর্যার ফলে দুই বছর বয়সে গাছে পরিপূর্ণ ফলন আসে। প্রতিটি পিলারে চারটি গাছ থেকে বছরে ৩০-৪০ কেজি ফল উৎপাদন হয়। বর্তমানে ৩৫০টি পিলারে প্রায় দেড় হাজার ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফলের বাজার মূল্য ১৮০-২০০ টাকা।
রামগড় হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা ভূষণ মহাজন বলেন, কলেজ পড়ুয়া নাহিদ হোসেনের ড্রাগন চাষ অনেকে অনুসরণ করছে। আমরা তার বাগান পরিদর্শন করে তাকে পরামর্শ দিচ্ছি। যারা বেকার যুবক বা শিক্ষার্থী, তারা ড্রাগনসহ বিভিন্ন ফলজ বাগান চাষ করে লাভবান হতে পারবেন। নাহিদ হোসেন এ ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
রামগড় হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা চিংহ্লাপ্রু চৌধুরী বলেন, ড্রাগন ফল রামগড়ের আবহাওয়া ও মাটির জন্য চাষে অত্যন্ত উপযোগী। বাউ-১ ও বাউ-২ জাতের ড্রাগন গাছে একটানা ৬-৭ মাস ফলন হয়। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এ ফল দৃষ্টি সুস্থ রাখে, শরীরের চর্বি ও রক্তের কোলেস্টেরল কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। স্থানীয় বাজারে চাহিদা থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

