সাইফুল হাসান ॥
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়াডের দুর্গম লংথিয়ান পাড়ায় ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। লংথিয়ান পাড়া ও আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আরও অর্ধশতাধিক মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে বলে জানা যায় স্থানীয় সূত্রে। নিহত ব্যাক্তিরা হলেন- গবতি বালা ত্রিপুরা(৫০) ও দরুং ত্রিপুরা (৬০)। তারা লংথিয়ান পাড়ার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোর রাতে গবতি বালা ত্রিপুরা ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। দুপুরে আরেক বৃদ্ধ দরুং ত্রিপুরাও রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সাজেকের লংথিয়ান পাড়া, অরুণ পাড়া, কাইজা পাড়া, রায়না পাড়া ও শিয়ালদহ এলাকাসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় ডাইরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এলাকায় আশপাশে কোন হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয় তান্ত্রিক দ্বারা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন এলাকাবাসী। এলাকায় যাতায়াতের কোন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পায়ে হেঁটে এতো দুর থেকে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগীরা চিকিৎসা নিতে যেতে পারছে না বলে জানান স্থানীয়রা।
সাজেক ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার জোপুইথাং ত্রিপুরা বলেন, শিয়ালদহ এলাকায় ১০ থেকে ১২ জন ডাইরিয়া রোগী রয়েছে, মুলত ছড়ার পানি থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার বলেন, এলাকটি খুবই দুর্গম, পায়ে হাঁটা পথ ছাড়া বিকল্প নেই। মুলত খাবার পানি থেকে এই রোগ ছড়াচ্ছে। আমরা সংবাদ পাওয়ার পরপরই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. অরবিন্দু চাকমার সাথে যোগাযোগ করে একটি মেডিকেল টিম পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাশের বিজিবি বিওপি থেকেও স্যালাইন সরবরাহ করা হয়েছে তবে খুবই সীমিত।
বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. অরবিন্দু চাকমা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে চার সদস্যদের একটি মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় ঔষধ স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ সাজেকের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে। সাজেকের কংলাক পাড়া থেকে পায়ে হেঁটে ঘটনাস্থলে পৌছুতে একদিন লাগবে। মেডিকেল টিম এর সদস্যরা পৌঁছালে আরও বিস্তারিত জানতে পারবো।
এর আগে ২০১৬ সালে এখানে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়। পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মেডিকেল টিম দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় রোগ নিয়ন্ত্রণে আসে।