ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ॥
রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের নারানগিরি মুখ পাড়া। দেড় শতাধিক পরিবারের বসবাস এই পাড়ায়। কাপ্তাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ও এই পাড়াতে অবস্থিত।
গ্রামের দক্ষিণ দিকে নারানগিরি খালের পানির ¯্রােতে এবং উজানের পানির ধাক্কায় প্রতি বছর পাড় ভাঙ্গছে এই গ্রামের। ইতিমধ্যে এই পাড়ার বেশ কয়েকটি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেকোন সময় পাড়ার দক্ষিণ অংশ নারানগিরি খালের সাথে মিশে যেতে পারে বলে জানান এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গত বৃহস্পতিবার এই পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, নারানগিরি মুখ পাড়ার মাসাচিং মারমার বাড়ির শৌচাগার ও পানির কল গত বুধবার রাতে নারানগিরি খালে ধসে পড়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী লোকা বড়ুয়ার বাড়ির বসার ঘর ও রান্না ঘরের কিছু অংশ খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এসময় কথা হয় নারানগিরি পাড়ার প্রধান কারবারি ক্যহ্লাপ্রু মারমার সাথে। তিনি বলেন, খালের পানির স্রোতে গত বুধবার আমার বাড়ির কদম গাছ এবং বাঁশ ঝাড়ের মাটি ধসে গেছে, যে কোন মুহূর্তে আমার মাটির থাকার ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। আমরা পাড়াবাসী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।
নারানগিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ঐ এলাকার বাসিন্দা মংহ্লাচিং মারমা বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের পাড়াবাসীর একটা দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ হতে আরসিসি ব্লক দিয়ে ভাঙ্গণের মুখ হতে এই পাড়াকে রক্ষা করতে হবে।
রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শৈবাল সরকার এবং ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মাক্রাইচিং মারমা বলেন, বিগত পাঁচ বছর আগ হতে নারানগিরি খালের কারণে নারানগিরি মুখ পাড়ায় ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে চারটি ঘর ও একটি রাস্তা খালের গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়া এই বছর দুইটি পরিবারের ঘরের কিছু অংশ খালে ধসে পড়েছে, যে কোনও মুহূর্তে ঘর দুইটি সম্পূর্ণ ধসে যেতে পারে। খালের কিনারায় আরো ৯টি ঘর ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। অনতিবিলম্বে যদি পানি উন্নয়ন বোর্ড হতে এই পাড়ার নারানগিরি খালের দক্ষিণ অংশে ব্লক নির্মাণ করা না হয়, তাহলে এক সময় পাড়াটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
মুঠোফোনে বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করা হলে রাঙামাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, আমরা ঐ এলাকার সাইড পরিদর্শন করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নিব।