মেহেরাজ হোসেন সুজন, নানিয়ারচর ॥
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় মার্চ ও এপ্রিল মাসে আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। উপজেলায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন সাতজন, যার মধ্যে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নানিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ১৩ মার্চ ইসলামপুর গ্রামের কুলসুম আক্তার (২৬), ১৮ মার্চ খামারপাড়া এলাকার ধর্মীকা চাকমা (১৭), ৯ মার্চ ইসলামপুর গ্রামের আনোয়ারা আক্তার (২০), ৮ এপ্রিল বুড়িঘাট এলাকার রেজা বেগম (২০), ১৩ এপ্রিল বাগাছড়ি এলাকার নেয়ামুল হাসান (১৫), এরা কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে ২৬ মার্চ শ্রাবণ চাকমা (১৫) ডিজেল পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান।
সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে ২৭ মার্চ, চিল্লাতলী এলাকার পঞ্চাশোর্ধ নারী কালা সোনা চাকমা বিষপান করে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
স্থানীয় জনসাধারণের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে নানিয়ারচরে পারিবারিক অশান্তি, প্রেমঘটিত বিরোধ, সামাজিক চাপ এবং মানসিক অবসাদ বেড়ে যাওয়ায় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়ছে।
নানিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের মতে, মানসিক চাপ, পারিবারিক সমস্যা এবং সম্পর্কজনিত জটিলতা আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন।
নানিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, সম্প্রতি আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় আমরা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে স্থানীয় দোকানদারদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বাগান মালিক ছাড়া কাউকে কীটনাশক বিক্রি করা যাবে না। বিশেষ করে যদি ক্রেতা কোনও নারী হন, তাহলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কিংবা কোনো গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে কীটনাশক বিক্রি করার নির্দেশনা দেওয় হয়েছে।