অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই
কর্ণফুলী নদীতে নাব্যতা সংকটে প্রায়সময় বন্ধ হয়ে যায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনার ফেরি চলাচল। এতে দীর্ঘসময়ের জন্য খাগড়াছড়ি এবং রাঙামাটির সাথে বান্দরবান এর যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। ওইসময় ফেরিযোগে পারাপার করা শত শত যানবাহন চালক এবং যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
সম্প্রতি চন্দ্রঘোনা ফেরিঘাটে সরজমিনে গিয়ে এই দুর্ভোগের চিত্রের সত্যতা পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার রাত ১০টার পর থেকে বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে আছে ফেরি চলাচল। কারণ জানতে চাইলে ফেরীর দায়িত্বরত কর্মচারী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কর্নফুলী নদীতে ভাটার সময় পানি এতটায় কমে যায় যে নদীতে নাব্য সংকট দেখা দেয়। নদীর বুকে জেগে ওঠে বালুর চর। যেখানে ফেরী চলাচল বাধাগ্রস্থ হয়। ফেরীর মোটরের পাখা বালুরচরে আটকা পড়ে। তাই বন্ধ রাখতে হয় ফেরী পারাপার। তবে যখন নদীতে জোয়ারের পানির পরিমাণ বাড়ে তখন ফেরী চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে দীর্ঘক্ষণ ফেরী চলাচল বন্ধ থাকার ফলে নদীর দুই প্রান্তে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। যেখানে যাত্রী এবং চালকদের মাঝে চরম হতাশা ও দুর্ভোগের চিত্র ফুটে ওঠে। এবং এই দুর্ভোগের চিত্র প্রায়সময় দেখা দেয় বলে স্থানীয়রা জানান।
কর্ণফুলী নদী পারাপারের অপেক্ষায় থাকা বাস চালক শফিক মিয়া, আব্দুল কুদ্দুস সহ একাধিক চালক জানান, ফেরী পারাপারে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুরদুরান্ত থেকে আমরা গাড়ি চালিয়ে এসে এই জায়গায় থমকে যেতে হয়। কবে ফেরি চলাচল শুরু হবে এনিয়ে সবার মাঝে দেখা দেয় চিন্তা। গন্তব্যে সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারি না।
চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানগামী একাধিক যাত্রী জানান, একমাত্র এই ফেরির দুর্ভোগের কারণে আমরা অনেক সময় বান্দরবান যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। ফেরি চলাচল বন্ধ, তাই কখন চালু হবে এই অপেক্ষায় না থেকে আমাদের বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হয়। এতে আমাদের ভাড়াও অনেক বেশি খরচ হয় তেমনি সময়ও লাগে প্রচুর। এই দুর্ভোগ থেকে কবে মুক্তি মিলবে জানি না।
চন্দ্রঘোনা স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল, সুমন পাটোয়ারিসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এই চন্দ্রঘোনা ফেরিঘাটে একটি সেতু নির্মাণের জন্য আমরা দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছি। এছাড়া অনেক সময় খবরও আসে এখানে নাকি সেতুর অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু এখনো আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না।
এদিকে এবিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি জেলা সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, কর্ণফুলী নদীতে নাব্য সংকটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। ওইসময় দুর্ভোগ দেখা দেয়। তবে কর্ণফুলীতে ড্রেজিং এর পরিকল্পনা রয়েছে। ড্রেজিং করা হলে নাব্যতা সংকট দুর হবে। এছাড়া অতি জরুরি কাজে তিনি যাত্রী এবং চালকদের ফেরি চলাচল বন্ধকালীন সময়ে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের পরামর্শ জানান।