নিজস্ব প্রতিবেদক
আইনশৃঙ্খলা কোনোভাবেই অবনতি হতে দেয়া যাবে না। যারা পরিস্থিতি অবনতি করার চেষ্টা করবে তাদের কোন অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না।
রাঙামাটিতে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সাথে এক মতবিনিময় সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার দুপুরে রাঙামাটি রিজিয়নের প্রান্তিক হলে বিগত জেলার উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এই প্রতিনিধি দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে গণমাধ্যমকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে। কোন অবস্থায় পরিস্থিতি অবনতি করা যাবে না। যারা চেষ্টা করবে তাদের হাত ভেঙ্গে দেওয়া হবে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হাসান আরিফ জানিয়েছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বাহির থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের কোথাও যেনো ছন্দপতন ঘটছে। এর পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হবে।
সভায় পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ, পুলিশ প্রধান মইনুল ইসলাম, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রামের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাইনুর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শওকত ওসমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়দের মধ্যে বিএনপি, জনসংহতি সমিতি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পরিবহন মালিক শ্রমিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ বক্তব্য ও পরামর্শ তুলে ধরেন।
এদিকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সহিংসতার কারণে তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার সড়ক ও নৌ অবরোধ পালন করছে পাহাড়ি ছাত্র-জনতা। অবরোধে সমর্থন দিয়েছে প্রসীত খীসা নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ। এছাড়া শুক্রবারের সহিংসতায় ব্যাপক গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় শ্রমিক সংগঠনগুলো। এতে সকাল থেকে অবরোধ ও ধর্মঘটের কারণে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল নৌ চলাচলও। তবে শহরে কোনও পিকেটিং চোখে পড়েনি। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে শহরবাসী। আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতির ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি।