বিশেষ প্রতিবেদক, বান্দরবান ॥
দীর্ঘ একমাস বন্ধ থাকার পর বান্দরবান পার্বত্য জেলায় পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের দুয়ার খুলেছে। বৃহস্পতিবার থেকে বান্দরবান সদর, আলীকদম, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি চারটি উপজেলার দর্শণীয় পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণে পর্যটকদের জন্য বিধিনিষেধ উন্মুক্ত করা হলো। বুধবার সকালে পৌনে বারোটায় বান্দরবান জেলা প্রশাসন কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন এ ঘোষণা দেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বান্দরবানের পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ্ কাওছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসএম মঞ্জরুল হক, সেনাবাহিনী কর্মকর্তা, ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা, বিজিবি কর্মকর্তা, এনএসআই কর্মকর্তা, বান্দরবান হোটেল রিসোর্ট ওনার্স এসোসিয়েশন সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, জেলা রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, ট্যুরিস্ট জিপগাড়ি মালিক সমিতির সভাপতি নাছিরুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
প্রেসব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, পর্যটন শিল্প হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের প্রাণ। পরিস্থিতি বিবোচনায় সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই সীমিত পরিসরে চারটি উপজেলায় বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটন ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। বাকি তিনটি উপজেলা রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতে ভ্রমণে বিধিনিষেধ রয়েছে সরকারের। পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। যাতে কোনো পর্যটক কোনো ধরনের হয়রানি বা ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। একারণে নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারের বিধিনিষেধগুলো ভ্রমণকারী পর্যটকদের মেনে চলতে হবে। তিনি বলেন, খ্বুই গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি বিষয়ও মানতে হবে ভ্রমণকারীদের, তা হচ্ছে দর্শণীয় স্থানগুলো ভ্রমণে যাবার সময় নিয়ে যাওয়া পানির বোতল, খাবারের প্যাকেট’সহ ব্যবহৃত জিনিসপত্র যেন বর্জ্য হিসাবে পর্যটন স্পটগুলোতে ফেলে না আসেন। পর্যটন স্পটগুলো সৌন্দর্য এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রকৃতির কোনো ধরনের ক্ষতি করা যাবে না, প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণœ রেখেই পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে হবে। পরিস্থিতি বিবোচনায় পরবর্তীতে ভ্রমণের জন্য বান্দরবান জেলার সবগুলো পর্যটন খুলে দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তও রয়েছে। সেটির জন্য স্থানীয়দের সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে সরকারকে।
জেলার পুলিশ শহীদুল্লাহ্ কাওছার বলেন, পর্যটন শিল্প হচ্ছে এই অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক চাকা। পর্যটন খুলে দেয়া মানে স্থানীয়দের জীবনযাত্রার মান বিকশিত হওয়া। নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই সরকার পর্যটন খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশসহ সরকারের সবগুলো নিরাপত্তা সংস্থায় কাজ করছেন পাহাড়ে। সেকারণে ভ্রমণকারী পর্যটকদেরও তথ্য উপাত্ত দিয়ে এবং সরকারের বিধিনিষেধগুলো মেনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের সহযোগিতার পরামর্শ দেন পুলিশ সুপার।
প্রসঙ্গত: অনিবার্য কারণবশত গত ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে স্থানীয় প্রশাসন। এ বিধিনিষেধ ৬ নভেম্বর পর্যন্ত বলবৎ ছিল।