জিয়াউল জিয়া
পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণ কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি আব্যাহত রয়েছে। জেলার লংগদু, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, রাঙামাটি সদর উপজেলার নিম্ন এলাকায় হ্রদ তীরবর্তী বাড়িঘরে পানি ডুবে যাচ্ছে। পাশাপাশি ফসলের ক্ষতি বাড়ছে। জেলা বেড়েছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা।
অন্যদিকে ১৬টি জলকপাট দিয়ে ১ ফিট করে প্রতি সেকেন্ডে ছাড়া হচ্ছে ১৮ হাজার কিউসেক পানি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মাধ্যমে আরও প্রায় ২৫ হাজার কিউসেক পানি অপসরণ হচ্ছে। প্রতি সেকেন্ডে মোট ৪৩ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হলেও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারনে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য মতে, গতকাল ৬ ইঞ্চি করে ১৬টি জলকপাট দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ছাড়া হচ্ছে ৯ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছিলো। আজ সকাল থেকে ১৬টি জলকপাট দিয়ে ১ ফিট করে প্রতি সেকেন্ডে ছাড়া হচ্ছে ১৮ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। বর্তমানে হ্রদে পানি রয়েছে ১০৮.৪৮এমএসএল।
এতে দুর্ভোগে পড়েছে জেলার নি¤œ অঞ্চলের মানুষ এবং হ্রদতীরবর্তী এলাকার মানুষ। যোগাযোগ ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে কিছু এলাকায়।
রাঙামাটি হ্রদতীরবর্তী শান্তি নগর এলাকার বাসিন্দা মো. ফারুক বলেন, গত ২২ বছর এমন পানি হয়নি। বাড়িতে কখনো পানি উঠে নি। এবছর বৃষ্টি ও হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়িঘরে পানি উঠেছে। রান্না বান্না সব বন্ধ হোটেল থেকে কিনে এনে খাচ্ছি।
আসামবস্তি এলাকার পানিবন্দি আরেক বাসিন্দা মো. ইউনুছ মিয়া বলেন, খাবার পানির টিউবওয়েল ডুবে আছে। এখনো কেউ খোজ খবর নিতে আসে নি। আমরা এই এলাকার এতোগুলো মানুষ পানিবন্দি কেউ ত্রাণ সহায়তাও দেয়নি। এলাকার মানুষজন কষ্টে আছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার জানান, উপজেলার ৭নং ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ডে পানি উঠেছে। এতে প্রায় ৩ হাজার পারিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রয়েছে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, জেলায় ৫-৬ পরিবার পানবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সবচেয়ে বেশি বাঘাইছড়িতে। সকল নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ত্রাণ সহায়তা এবং আশ্রয় কেন্দ্র খোলার জন্য। প্রতি সেকেন্ডে মোট ৪৩ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হলেও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারনে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার পানি বেশি ছাড়া হলে ভাটির অঞ্চলে বন্যা সৃষ্টি হতে পারে। সব কিছু বিবেচনা করে পানি ছাড়া অব্যাহত রয়েছে।