বিশেষ প্রতিনিধি
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু) বলেছেন,‘যে সমাজে জাতিগত,সম্প্রদায়গত,সমষ্টিগত ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আছে, সেখানে সমস্যা লেগেই থাকবে, জাতিগত বৈষম্যর কারণে দিন দিন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত বৈষম্য এখনো বিরাজমান রয়েছে। দেশের শাসকগোষ্ঠী এখনো আমাদের বিশ্বাস করেনা, ধর্মীয় এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের সাথে যুগ যুগ ধরে বৈষম্য করা হয়েছে। এখনো সেই বৈষম্য বিদ্যমান। এ বৈষম্য দূর করতে যুব সমাজকে অগ্রনী ভূমিকা রাখতে হবে।’
বৃহস্পতিবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আয়োজিত ‘ বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় যুব সমাজের ভুমিকা” শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এইসব কথা বলেন।
সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারি যদি সবাই মুসলমান হত তাহলে এ বৈষম্য তৈরি হত না। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা শাসন বিদ্যমান। শুরু থেকে জরুরী অবস্থা, এরপর আশির দশকে অপারেশন দাবানল নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা শাসন ছিল। শান্তি এবং শোষণ নিপীড়ন থেকে বাঁচার জন্য ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও পাহাড়ের মানুষ তা থেকে মুক্ত হতে পারেনি। বিগত সাতাশ বছরে অনেক কিছুর উন্নয়ন হলেও শাসক গোষ্ঠী পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত করেনি।
আমরা আমাদের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে দিন দিন জাতিগত শোষন নিপীড়ন বেড়েই চলেছে। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির পর সেনা শাসন অপারেশন উত্তরণ বিদ্যমান আছে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, ‘কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি বাঙালীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা হয়। প্রকৃত অর্থে পাহাড়ের স্থায়ী বাঙ্গালীদের সাথে পাহাড়িদের মাঝে কোন বিরোধ নেই। এখানে বৈষম্য জিইয়ে রাখা হয়েছে।’
সেমিনারে বিশেষ আলোচক ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্না চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম। সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমা, শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, প্রভাষক আনন্দ জ্যোতি চাকমা, উন্নয়নকর্মী তনয় দেওয়ান।