জিয়াউল জিয়া ॥
সভায় সাবেক সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ সভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেছেন, আমরাও অস্ত্র জমা দিয়েছি। আমরা সবাই এগিয়ে আসলে পার্বত্য সমস্যা কোন সমস্যা নয়। এটি দ্রুত সমাধান করা সম্ভব। পার্বত্য সমস্যাকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ‘আত্মনিয়ন্ত্রাধিকার প্রতিষ্ঠার অন্দোলনে আদিবাসী তরুণরাই মূল শক্তি’ এই স্লোগানে বুধবার সকালে রাঙামাটিতে ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস’র আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। শহরের পৌর চত্বরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
ঊষাতন তালুকদার আরও বলেন, কেউ কেউ বলে আমাদের ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি দিলে বাংলাদেশর স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ত্ব ক্ষুন্ন হবে। পৃথিবীর ৭০টি দেশে ‘আদিবাসী’ রয়েছে। তাদের দেশে কি স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হচ্ছে? যে অযুহাতে বলা হচ্ছে এটি মিথ্যা অযুহাত ছাড়া আর কিছুই না। ঘরে বসে থাকতে অধিকার কেউ দিয়ে যাবে না। অধিকার আদায়ের জন্য মাঠে নামতে হবে। সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
‘বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম’ পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট চঞ্চু চাকামা, এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির রাঙামাটির জেলার সাধারণ সম্পাদক শংকর বড়–য়া।
সভায় বক্তরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৩ টি নৃ গোষ্ঠীর বাস। প্রকৃতির সাথে মিশে থাকা পাহাড়ের এসব মানুষ নিজদের পরিচয় নিয়ে এ দেশে বেঁচে থাকতে চান। সরকার বা অন্য কারো চাপিয়ে দেয়া নামে নয়, নিজেদের যে সঠিক পরিচয়, তার স্বীকৃতি চান। কেউ কারো পরিচয় নির্ধারিত করে দিতে পারে না। আমরা ‘আদিবাসী’ হিসেবে পরিচয়ে বেঁচে থাকতে চাই। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানে স্বদিচ্ছায় এগিয়ে আসলে এই সমস্যা কোন সমস্যাই না।
বক্তারা আরও বলেন, নিজস্ব সত্তা, পরিচয়, ঐতিহ্য ও ভাষা রয়েছে। ফলে ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি পাওয়ার অধিকারও রয়েছে। স্বাধীনতার এতো বছর পরও নিজেদের ক্ষুদ্র নৃ-গাষ্ঠী বা উপজাতি হিসেবে পরিচয় দিতে চান না তারা। তাই ‘আদিবাসী’ হিসেবে তারা সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবি করেছেন বক্তারা।
আলোচনা সভা শেষে দিবসটি উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।