জাকির হোসেন, দীঘিনালা
আতঙ্ক ছাপিয়ে পোড়া বাজারে ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। নতুন করে আবারো প্রাণচাঞ্চল্য ফিরছে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার লারমা স্কোয়ার বাজারে। গত বৃহস্পতিবার মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে পর আগুনে পুড়ে বাস টার্মিনাল সংলগ্ন লারমা স্কোয়ার বাজার। এরপর থেকে পাহাড়ি-বাঙালি মিশ্রিত সম্প্রীতির এ বাজারটিতে সামান্য লোক সমাগম দেখা গেলেও তা উল্লেখযোগ্য ছিল না।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার বিকালে সরেজমিনে বাজারটিতে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারটিতে উভয় জনগোষ্ঠীর উপস্থিতিতে অনেকটা প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে।
প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত পাহাড়, ছড়ার পাশ থেকে ঢেঁকি শাক, কচু শাক নানান শাকসব্জি আহরণ করে সেগুলো বিক্রি করে চলে পাহাড়ের অনেক হতদরিদ্রের পরিবার। সকাল-বিকাল উপজেলার লারমা স্কোয়ার বাজারে বসে এসব নির্ভেজাল সব্জির হাট। আর স্বল্পমূল্যে পাওয়া এসব সব্জি কিনতে পাহাড়ি-বাঙালি সকল ক্রেতাদের ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো। কিন্তু সাম্প্রতিক দুর্বৃত্তের আগুনে বাজারটি পুড়ে যাওয়ার এক সপ্তাহ পর আবার সেই চেনা রুপে ফিরতে শুরু করেছে বাজারটি।
এসময় কিছু ক্ষুদ্র সব্জি বিক্রেতাকেও দেখা গেছে নতুন করে পাহাড় থেকে আরোহিত সব্জি বিক্রয় শুরু করতে। পাহাড়ি-বাঙালি ক্রেতাদের বেশ উপস্থিতিও চোখে পড়েছে। সব মিলিয়ে যেন আতংক আর বেদনা ছাপিয়ে হলেও নতুন করে আবারো প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করছে বাজারটিতে।
কার্বারি পাড়া থেকে পাহাড়ি জুমের কাঁচা মরিচ বিক্রয় করছিলেন নিক্সন চাকমা (৪২)। নিক্সন জানান, বাজারে ক্রেতা আসবেন কি-না সেটি নিয়ে দ্বিধা-দ্ব›েদ্বর মধ্যেই তিনি মরিচ বিক্রয় করতে এসেছেন। নতুন করে কোন সংঘাত নয়, পূর্বের মতো বাজারটি আবারো জমে উঠুক সেটাই তাঁর প্রত্যাশা। পাহাড় থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন ধরনের শাক বিক্রয় করতে আসা সুপারি বাগান এলাকার ফেনী ত্রিপুরা (২৫)সহ অনেকইে একই অভিব্যক্তি জানান।
লারমা স্কোয়ার বাজারের ব্যবসায়ি সুজন দাশ জানান, ছোট কোন ভুল বুঝাবুঝি হলে সংঘাতে না গিয়ে আলোচনা মাধ্যমেই সমাধান করা উচিত। তবুও ঘটে যাওয়া ঘটনার যেন আর কোনও পুনরাবৃত্তি না হয়। কোন ধরনের গুজবে কান না দিয়ে সকল জনগোষ্ঠী সম্প্রীতি বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান থাকুক এটাই কাম্য।