শুভেচ্ছা মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ মাধ্যমে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদ্য গঠিত নবনির্বাচিত কমিটি প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। শুক্রবার (১৪ মার্চ ২০২৫) বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিল থেকে এক শুভেচ্ছা মিছিল বের হয়ে প্রেসক্লাব প্রদক্ষিণ করে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এক ছাত্র সমাবেশের মধ্যে দিয়ে এই কমিটি প্রকাশ করা হয়।
“ড. ইউনুস ফ্যাসিস্ট হাসিনা নন, প্রমাণ দিন; পাহাড়ে সেনা দমন-পীড়ন, সেনাসৃষ্ট সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করুন;সারাদেশে নারী ধর্ষক-ভূমিদস্যু-লুটেরা ও মাফিয়াদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তি এক হোন, লড়াই করুন” এই স্লোগানে সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নব নির্বাচিত সভাপতি অমল ত্রিপুরার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপির সদ্য সাবেক সভাপতি অঙ্কন চাকমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় সহ-সভপতি কুনেন্টু চাকমা, সহ-সাধারণ সম্পাদক সোহেল চাকমা ও শিল্প সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক রূপসী চাকমা। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক রোনাল চাকমা।
সমাবেশে অমল ত্রিপুরা বলেন,জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে পিসিপির নেতা-কর্মীরা পাহাড়-সমতলে বিভিন্নস্থানে আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করার মাধ্যমে ছাত্র সংগঠন হিসেবে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে। রংপুরে আবু সাঈদসহ সারাদেশে হত্যাকা-ের ঘটনার প্রতিবাদে পিসিপির নেতৃত্বে ১৭ জুলাই ’২৪ খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ও ২১ জুলাই পানছড়িতে কালো পতাকা মিছিল এবং কারফিউ উপেক্ষা করে বন্ধুপ্রতিম ছাত্র সংগঠনের সাথে একিভূত হয়ে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনকরেছিলাম। আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে পিসিপির নেতা-কর্মীদেরকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ এবং প্রশাসনের নানা হুমকি, ভয়-ভীতিমূলকপরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। জুলাইয়ের শিক্ষার্থী-জনতার সাহসী ভুমিকার ফলে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে চলা ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটেছিল।
দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে অমল ত্রিপুরা বলেন, গণঅভ্যুাত্থান পরবর্তীতে এদেশের জনগণের একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার আকাক্সক্ষা ছিল। এজন্য তারা দেশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে এবং ধর্মীয়, সংখ্যালঘু জাতিসত্তা, নারী-শিশু ও নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এমনটাই আশা করেছিল। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ এর বিপরীতে ধাবিত হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন কর্তৃক প্রতিনিয়ত সভা-সমাবেশে হামলা করা হচ্ছে।দিন দুপুরে লুটপাট, ডাকাতির ঘটনা ঘটছে,হত্যা-খুন, গুম, বিচার বহির্ভুত হত্যা ও নারী-শিশু ধর্ষণ মত জঘণ্যতম ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। এই ঘটনাগুলো দেশের মানুষকে উদ্বেগ উৎকন্ঠার মধ্যে ফেলেছে। এসব ঘটনা অচিরেই বন্ধ হওয়া দরকার এবং তা বন্ধের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
সমাবেশে অঙ্কন চাকমা বলেন, এদেশটি কারোও বাপের না। দেশটি শ্রমিক, কৃষক, নারী, সংখ্যালঘু জাতিসত্তার, মেহনতির মানুষের। জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানে পতিত সরকার যখন ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যা করছিল তখন এর বিরুদ্ধে শ্রমিক, নারী ও রিক্সা চালকেরাও প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। পুলিশে গুলিতে মানুষ যখন আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিল তখন রিক্সা চালকেরা তাদেরকেহাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন।
তিনি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রতি আহ্বান জানান।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)