শংকর হোড়
সাম্প্রতিক সময়ে দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘটিত সহিংস ঘটনা তদন্তের জন্য সহিংস ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন ও তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, বিগত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে একটি মোটর সাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় সংগঠিত অপ্রীতিকর ঘটনা এবং উক্ত ঘটনার জেরে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় উদ্ভ‚ত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংশ্লিষ্ট ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন ও তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিটি গঠন করা হলো। এতে আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে(উন্নয়ন)। এছাড়া সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, রাঙামাটি, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, খাগড়াছড়ি, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বান্দরবান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, রাঙামাটি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, খাগড়াছড়ি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বান্দরবান।
আদেশে আরো বলা হয়, সংঘটিত সহিংস ঘটনার প্রকৃত কারণ, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিতকরণ এবং ভবিষ্যতে একই জাতীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যথাযথ সুপারিশ প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। কমিটিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তদন্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান ইউপিডিএফের
সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা তদন্তের জন্য সরকার থেকে গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে জাতিসংঘের তত্ত¡াবধানে ও অংশগ্রহণে স্বাধীন ও অবাধ তদন্তের দাবি জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের দায়িত্বরত নিরন চাকমা প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়।
শনিবার এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের সহ-সভাপতি নূতন কুমার চাকমা ইউপিডিএফের দাবিকে পাশ কাটিয়ে সরকার থেকে বৃহস্পতিবার একতরফাভাবে তদন্ত কমিটি গঠনকে লোক দেখানো আখ্যায়িত করে বলেন, এই কমিটির প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের জনগণের কোন আস্থা নেই।
অতীতে বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর ব্যর্থতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘লোগাং গণহত্যা ও কল্পনা চাকমার অপহরণ তদন্তের জন্য গঠিত দু’টি তদন্ত কমিশন সম্পর্কে জনগণের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। এই কমিটিগুলো স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিল।’
ইউপিডিএফ নেতা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান বাস্তবতায় জাতিসংঘের তত্ত¡াবধান ও অংশগ্রহণে তদন্ত ছাড়া হামলার প্রকৃত কারণ ও অপরাধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব নয়।’