শুভ্র মিশু
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বগাছড়ি এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিহীন ও গৃহহীন আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমি ও গৃহ পায় আটটি পরিবার। যার মধ্যে সেখানে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে তিন পরিবার বাকি পাঁচ পরিবারের চার পরিবারের সদস্যরা মাঝে মাঝে আসে ঘর দেখাশুনা করতে আর এক পরিবারের সদস্যরা তেমন একটা আসে না বললেই চলে, জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নানিয়ারচরের বগাছড়ি এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখায় যায়, বিভিন্ন পর্যায়ে সেখানে ঘর ও জমি পেয়েছেন আটটি পরিবার। সেখানে গিয়ে দেখা যায় বেশির ভাগ ঘরে তালা। যে তিন পরিবার সেখানে স্থায়ীভাবে রয়েছেন তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বন্ধ ঘরগুলোতে তেমন কেউ থাকে না। যারা ঘর পেয়েছেন তারা মাঝে মাঝে আসেন দেখতে। আর একটি পরিবার তেমন একটা আসে না বললেই চলে।
সেখানে ঘর প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়ারা হলেন, হাদিজা বেগম, নাসিমা বেগম, সালমা বেগম, শাহানুর বেগম, মো. জমির আলী, মুক্তা দাশ, কনক দাশ, দুলালী খীসা। যার মধ্যে হাদিজা বেগম, নাসিমা বেগম, সালমা বেগম সেখানে স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন আর জমির আলী সপ্তাহ দুয়েক পরপর আসেন, শাহানুর বেগম,মুক্তা দাশ, কনক দাশ মাঝে মাঝে সেখানে আসেন ঘরের দেখাশুনা করতে। দুলালী খীষা ঘর পাওয়ার প্রথম দিকে সেখানে থাকলেও পড়ে আর আসেন না বলে জানিয়েছেন সেখানে বসবাস করা হাদিজা, নাসিমা, সালমারা।
নাসিমা বেগম জানান, এখানে আমরা আট পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছি। যার মধ্যে তিন পরিবার এখানে থাকি বাকি পাঁচ পরিবার নানিয়ারচরে থাকে। এখানে তারা কি কাজ করে খাবে। সেজন্য তারা নানিয়ারচরে থাকে। প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে আমরা খুব খুশি। ভালো আছি।
নিয়মিত না থাকা ভাঙ্গারির ব্যবসায়িপ্র জমির আলী জানান, আমি ভাঙ্গারির ব্যবসা করি নানিয়ারচর বাজারে। সেখানে কাপ্তাই লেকের পারে আমার একটা ঘর আছে। সে ঘরের নিচে পানি আসে তাই এই ঘর ইউএনও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী উপহার হিসেবে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমাদের পায়ের নিচে মাটি ছিল না, তিনি মাটি দিয়েছেন। কিন্তু এখানে আয় উপার্জন করার কোন উৎস নেই। যার কারণে সপ্তাহ দুয়েক পর পর আসি আর বেশির ভাগ সময় নানিয়াচর বাজারে থাকতে হয়। আগের ঘরে গিয়ে থাকি। আর এখানে ভাঙ্গারির জিনিস এনে রাখি। এখানে কোন কিছু করে উপার্জনের ব্যবস্থা থাকলে এখানেই স্থায়ী ভাবে থাকতাম।
কনক দাশ, মুক্তা দাশ, শাহিনুর বেগম ও দুলালী খীসার মুটোফোন নাম্বার না পাওয়ায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তারা কেন এখানে স্থায়ী ভাবে থাকেন না তা জানতে। তবে এলাকাবাসী জানান তারা নানিয়াচর বাজারে বাড়ি ঘরে কাজসহ নানা কাজ করে থাকেন। যার কারণে এখানে থাকেন না।
বুড়িঘাট ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার আব্দুল মালেক জানান, এখানে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৮টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হলেও এখানে তারা যে কাজ করে আয় উপার্যন করে তার তেমন ব্যবস্থা না থাকায় তিনটি পরিবার স্থায়ীভাবে থাকেন বাকিরা কাজের জন্য বাইরে থাকেন, মাঝে মাঝে আসা যাওয়ার মধ্যে আছেন। দুলালী খীসা প্রথমদিকে ছিলেন তার পারিবারিক মোনমালিন্য হওয়ার পর থেকে তিনি আর এখানে থাকেন না। বিষয়গুলো আমি নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি, যাতে তাদের এখানে স্থায়ী ভাবে রাখার ব্যবস্থা করেন।
এই বিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার জানান, যাদের সেখানে ঘর দেওয়া হয়েছে তাদের সেখানে থাকার জন্যই দেওয়া হয়েছে। ঘর ফাঁকা রাখার কোন সুযোগ নাই। সেখানে তাদের থাকতে হবে। না হলে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিব। আমি বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করবো।