বিশেষ প্রতিবেদক, বান্দরবান
প্রশাসনের আশ্বাসে বান্দরবান জেলায় বাজারফান্ডের লিজের মেয়াদ বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের ডাকা সোমবারের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার বিকেলে চারটায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক সম্মেলনকক্ষে প্রশাসন আয়োজিত জরুরি মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: আবু তালেব এর সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস.এম হাসান, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান, জেলা নাগরিক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জেলা সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন, জেলার যুগ্ম সম্পাদক শাহজালাল রানা, গণমাধ্যমকর্মী মিনারুল হক, আলাউদ্দীন শাহরিয়ার, এইচ এম সম্রাট, মোজাম্মেল হক লিটন প্রমুখ।
সভা শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, আট দফা দাবিতে সোমবার ১৩ অক্টোবর বান্দরবান জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন দাবি পূরণের আশ্বাস দেয়ায় জনস্বার্থে হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়া হলো। এ মাসের মধ্যেই প্রশাসন, নাগরিক পরিষদ এবং স্থানীয় ভুক্তভোগীদের নিয়ে যৌথ সভার মাধ্যমে দাবি পূরণের ধাপগুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হবে। প্রশাসন আশ্বস্ত করেছেন তাদের পক্ষে স্থানীয়ভাবে পূরণ করার ধাপগুলো তাড়াতাড়ি দ্রুত পূরণ করবেন এবং মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে জোরালো ভাবে লিখবেন। দাবি পূরণ না হলে আবারও হরতাল’সহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: আবু তালেব বলেন, হরতাল কর্মসূচি জনবান্ধন নয়, দাবি পূরণে প্রশাসনের আশ্বাসে কঠোর কর্মসূচি থেকে নাগরিক পরিষদ সরে আসায় তাদের সাধুবাদ জানাই। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় দাবি-দাওয়া নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করে জনস্বার্থে যৌক্তিক দাবিগুলো দ্রুত পূরণে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের ৮ দফা দাবিগুলো হলো- ব্রিটিশ রচিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ বাতিল, জমি ক্রয় বিক্রয় চাকুরি শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে রাজার সনদ বাতিল, তিন পার্বত্য জেলায় জমি ক্রয় বিক্রয় এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা চালু, বাজারফান্ড প্লটের লীজের মেয়াদ-৯৯ বছরে উন্নীত করা ও বন্ধ রাখা ব্যাংক ঋণ পুনরায় চালু করা, উন্নয়নের স্বার্থে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় পরিবেশ বান্ধব ইটের ভাটাসহ কলকারখানা ও ইন্ডাস্ট্রি চালু করা, আইনশৃঙ্খলা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে তিন পার্বত্য জেলায় প্রত্যাহারকৃত ২৪৬টি সেনাক্যাম্প পৃন:স্থাপন করা, অবৈধ অস্ত্র উদার করে চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ধর্ষণ বন্ধ করে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, চাকুরী সহ সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে সমান অধিকার ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা।

