নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সাংবাদিক কামাল আহমেদ বলেছেন, বর্তমান প্রেস কাউন্সিল তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি অকেজো হয়ে পড়েছে। এটি বিলুপ্ত করে নতুন কোন প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে হবে। একইসাথে মফস্বল থেকে রাজধানী ঢাকার সাংবাদিকের জীবনমান উন্নয়ন ও পেশাগত স্থিতিশীলতা বিবেচনায় নিয়ে বেতনকাঠামো নির্ধারণসহ অন্যান্য বিষয়ে সুপারিশ করব। মঙ্গলবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে তিন পার্বত্য জেলার সংবাদকর্মীদের সাথে গণমাধ্যম সংস্কার বিষয়ক মতবিনিময়কালে এইসব কথা বলেন তিনি।
এইসময় কমিশনের সদস্য বেগম কামরুন্নেছা হাসান, মোস্তফা সবুজ ও আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সংবাদ রাঙামাটি খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সংবাদকর্মীরা নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রেক্ষিতে নানান বিষয়, কাজের পরিবেশ ও পেশাগত উন্নয়ন,স্থানীয় নানা পক্ষের চাপসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ তুলে ধরেন।
এসময় বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক একেএম মকছুদ আহমেদ, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি তরুণ কান্তি ভট্টাচার্য, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক, দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পাদক ফজলে এলাহী, রাঙামাটি রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমাসহ ২৪ জন সংবাদকর্মী। মতবিনিময় সভায় পার্বত্য তিন জেলা থেকে ৭৫ সংবাদকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
সভায় গণমাধ্যমকর্মীরা বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সর্বদা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে থাকে। কিন্তু সংবাদকর্মীরা সে অনুযায়ী বেতন-ভাতা বা সম্মানি পান না। তাদের জীবিকা এবং জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন। পাশাপাশি সাংবাদিকদের জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষাগত অর্জন সাপেক্ষে নিয়োগ প্রদান এবং যারা সাংবাদিকতা পেশায় আসতে চান তাদের জন্য প্রেস কাউন্সিল বা পিআইবি কতৃক কোর্স চালু করে কোর্স সমাপন সাপেক্ষে সাংবাদিক হতে পারেন সেই সুযোগ রাখার দাবি জানান বক্তারা।
তারা আরো বলেন, অপ-সাংবাদিকতা রুখতে হলে ভুঁইফোড় গণমাধ্যম বন্ধ করতে হবে এবং নতুন গণমাধ্যম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাইপূর্বক আরো সচেতন হতে হবে। কিছু গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের বেতন না দিয়ে উল্টো নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে অর্থ দাবি করে, সেসব গণমাধ্যমকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান সংবাদকর্মীরা।
স্থানীয় সাংবাদিকদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা শোনার পর গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সারাদেশ থেকেই গণমাধ্যমকর্মীদের ভাষ্য, সুপারিশ ও অভিজ্ঞতা জানছি। একইসাথে জনজরিপও করছি, কেমন গণমাধ্যম দেখতে চান মানুষ। সবকিছু মিলিয়ে একটি সমন্বিত প্রস্তাবনা সরকারের কাছে তুলে দিব আমরা। আমরা আশা করছি, কিছু একটা হবে, কিছু পরিবর্তন আসবে।
তিনি আরো বলেন, গণ্যমাধ্যম সংস্কারের জন্য সবথেকে বড় অংশীজন হলো জনসাধারণ। তাঁদের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে। এই লক্ষ্যে গণজরিপের কাজ আজ শেষ হবে। সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও জীবনের নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হবে।