রাঙামাটিতে বনবিভাগের জলবায়ু বিষয়ক কর্মশালা//
ডেস্ক রিপোর্ট॥
সোমবার সকালে পরিষদের সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আয়োজনে দিনব্যাপী এক কর্র্মশালার উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী।
উদ্বোধনকালে চেয়ারম্যান বলেন, এধরনের প্রকল্প পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পার্বত্য চট্টগ্রামে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আমরা বুঝতে পারছি। বন হারিয়ে আমরা বুঝতে পারছি বন কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ। বিশ^ব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের সবচাইতে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম। বন কমে যাওয়ায় আমরা এখন প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যে আছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বন সৃজন করতে চাইলে স্থানীয় মানুষের সাথে বনবিভাগের মানসিক দূরত্ব কমাতে হবে। স্থানীয় মানুষ বিভিন্ন কারণে বনবিভাগকে প্রতিপক্ষ মনে করে। এই ধারণাবোধ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পুলিশ জনগণের বন্ধু। এই শ্লোগানের ওপর ভিত্তি করে পুলিশ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের সমঝোতা আছে। বনবিভাগের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যে বিরোধ আছে সেখান থেকে বেরোতে হবে। রিজার্ভ ফরেস্টের সীমানা ঠিক করতে হবে। আমরা এখন বুঝছি বন দরকার আছে। খালী জায়গায় জনগণকে সম্পৃক্ত করে বনায়ন করতে হবে। মানুষ যেখানে বসবাস করেনা সেখানে বনায়ন করা হোক। তিনি বেতবুনিয়া ইউনিয়নের কথা উল্লেখ করে প্রশ্ন রাখেন বেতবুনিয়ার মত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘনবসতিপূর্ণ ইউনিয়নকে কিভাবে রিজার্ভ ঘোষণা করা হলো। তিনি বলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের খালী, পতিত জায়গায় বনায়ন করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া আছে। প্রত্যেক মৌজায় ভিসিএফ সৃষ্টি, সংরক্ষণ করতে হবে। যারা গাছ কাটবেনা এবং যে গাছ কার্বণ নিঃসরণে ভূমিকা রাখবে তার মালিককে সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করলে গাছ কাটা হবেনা। মানুষকে সচেতন করতে হবে। বলা হচ্ছে জুমচাষ পরিবেশের ক্ষতি করে। কিন্তু জুমচাষীকে জুমের বিকল্প জীবিকা উন্নয়নে সহায়তা দিলে সে জুম করবেনা। সে ব্যবস্থা করতে হবে।
বন অধিদপ্তরের ডেপুটি চীফ কনজার্ভেটর অব ফরেস্ট (শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ) মোঃ মাঈনউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে¡ অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ডেপুটি চীফ কনজার্ভেটর অব ফরেস্ট মোঃ রাকিবুল হাসান মুকুল, রাঙ্গামাটির কনজার্ভেটর অব ফরেস্ট মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মাইনুল ইসলাম এবং সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাহেদুল ইসলাম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভারনমেন্টাল সায়েন্সেস এর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ছালেহ মোঃ শোয়াইব খান। কর্মশালায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, হেডম্যান, কার্বারী, বনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সুফলভোগী এবং বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।