মিশু মল্লিক/মাহমুদুল হাসান
৮ দিনের টানা বৃষ্টিতে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ির নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বাঘাইছড়ি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড এখন পানিতে থৈ থৈ। শুধুমাত্র বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার চৌমুহনী চত্বর ব্যাতীত প্রায় পুরো বাঘাইছড়ি এখন পানির নিচে। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, বাঘাইছড়ি উপজেলার বেশিরভাগ স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।
বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার পাশাপাশি মারিশ্যা, সারোয়াতলী, খেদারমারা, আমতলী ও সাজেক ইউনিয়নেরও বেশকিছু নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি আছেন ইউনিয়নের বাসিন্দারা। প্লাবিত হওয়া ইউনিয়নগুলোতেও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েকশত পরিবার। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাতে বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও বাঘাইছড়ি পৌরসভার উদ্যেগে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় এক হাজার জনের জন্য রাতের খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার (৯ আগস্ট) দুপুরের জন্যও খাবার তৈরি করা হচ্ছে।
সারোয়াতলী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহাব বলেন, প্রতিবছর বৃষ্টি হলেই বাঘাইছড়ির নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে আমরা পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করি। আজ ৩দিন হয়ে গেল বাসা ডুবে গেছে। আমরা খাবারসহ বিশুদ্ধ পানির কষ্টে আছি ভীষণ। পানি না নামলে এই কষ্ট আরো বাড়বে।
বাঘাইছড়ি সদরের মাদ্রাসা পাড়া এলাকার বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, আজ দুইদিন হলো বাসায় পানিবন্দি অবস্থায় আছি। বৃষ্টিও কমছে না পানিও নামছে না। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বেড়ে গেছে। আমরা খুব মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি।
ইতিমধ্যে বাঘাইছড়ির বিভিন্ন ইউনিয়নে বন্যার্তদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাঘাইছড়ি পৌর এলাকায় বন্যার্তদের জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। বুধবার বিকেল থেকে পৌর এলাকায়ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, গত বুধবার থেকে টানা বর্ষণের ফলে বাঘাইছড়িতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল থেকে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। উপজেলার প্রায় ৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে এবং গতকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়মিত খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও বন্যার্তদের জন্য ২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে চালসহ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে।