আলাউদ্দিন শাহরিয়ার, বান্দরবান
বান্দরবানে বৃষ্টিপাত কমায় চারদিন পর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে সব উপজেলাগুলো এবং সারাদেশের সাথে বান্দরবান জেলার সড়ক যোগাযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। চারদিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন জেলায় খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানায়, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় ছয়দিন পর বান্দরবান জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। অধিকাংশ প্লাবিত এলাকা ও সড়কগুলো বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে বান্দরবান-কেরানীহাট-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হলুদিয়া, বায়তুলইজ্জত এলাকায় সড়কে পানি উঠায় সারাদেশের সাথে বান্দরবান জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে তিনদিন ধরে। পাহাড় ধসে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও বন্ধ রয়েছে। জেলা সদরের মেম্বার পাড়া, আর্মীপাড়া, শেরেবাংলা নগর, ইসলামপুর, ওয়াবদাব্রীজ এলাকা এবং লামা, আলীকদম উপজেলায় এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে হাজার হাজার পরিবার।
জেলায় দু’শতাধিক আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে বিশ হাজারের বেশি মানুষ। বুধবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি থেকে আরও ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের নাম খংচা মারমা। এরআগে সদরে কালাঘাটা গুদারপাড় এলাকায় পাহাড় ধসে মা-মেয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন-নূর নাহার (৪২) ও সাবুকননেছা (১৪)। এছাড়াও আলীকদমে বন্যায় পানিতে ডুবে ১ জনের মৃত্যু হয়। নিহতের নাম পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়িতে ও টংকাবর্তীতে বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। বান্দরবান পৌরসভার মেয়র সৌরভ দাস শেখর বলেন, বিগত ত্রিশ বছরে এমন ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়নি বান্দরবানবাসী। প্লাবিত অধিকাংশ এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। প্লাবিত এলাকাগুলো কাঁদা মাটি এবং ময়লা আবর্জনা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে পৌরসভা।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বশীল কনভেনার মোজাম্মেল হক বাহাদুর বলেন, পৌর পানি সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি প্লাবিত হওয়ায় মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। সবগুলো মেশিন অকেজো হয়ে পড়েছে। তবে মেরামতের মাধ্যমে দ্রুত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বান্দরবান জেলার সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লামা ও সদর উপজেলায়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনী, প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, পৌরসভা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একসাথে সমন্বয় করে কাজ করছে দূর্গতদের সহযোগিতায়। বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।