আলাউদ্দীন শাহরিয়ার, বান্দরবান ॥
বন্যায় বান্দরবানে লন্ডভন্ড ফসলী জমিতে ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্নে ধানের বীজের চারা রোপণ করছেন কৃষক। চোখে মুখে দুশ্চিন্তার চাপ থাকলেও মনে সাহস নিয়ে মাটিতে সোনা ফলাতে মাঠে নেমে পড়েছেন। শ্রমিকের মজুরি না থাকায় খাড়া রোদ্রে একাই জমিনে ধানের বীজ বপন করছেন কৃষক মো. কবির। শনিবার বান্দরবান সদর উপজেলার সূয়ালক ইউনিয়নের ভাগ্যকুল এলাকায় দেখাগেলো এমন চিত্রের।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. কবির বলেন, প্রকৃতির উপরে কারো হাত নেই। বন্যায় ৭০ কাঠা জমির ধান ও সবজি খেতের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। হাতে কোনো অর্থই নেই, ধারদেনা করে চারা কিনে ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে বারি-১২ ধানের বীজের চারা রোপণ করছি। মজুরির টাকা না থাকায় শ্রমিক কাজে লাগাতে পারিনি। একা একা যতটুকু সম্ভব আস্তে আস্তে চারা রোপণ করে চলেছি। কৃষকের দাবি, সব জমিগুলোও নিজের নয়, বর্গাচাষী হিসেবেই চাষ করি। আগামীতে ফসল ভালো হলে ধান বিক্রি করে সবার ধারদেনার টাকাগুলো পরিশোধ করে দিবো।
অপরদিকে ভাগ্যকুল-কাইচতলী সড়কে রাস্তার পাশেই দেখা হলো আরও কয়েকজন কৃষকের। তাদের একজন বয়োজ্যেষ্ঠ কৃষক আবুল কাশেম। ছাতা মাতায় খাড়া রোদ্রের মধ্যে বীজতলা ধানের চারা নাড়াচাড়া করছিল।
বয়োজ্যেষ্ঠ কৃষক আবুল কাশেম বলেন, বন্যায় জমির ফসল নষ্টে হয়ে যাওয়ায় ধানের চারা সংগ্রহ করতে এসেছেন তিনি। বাড়ি সাতকানিয়ায়। ওখানে বন্যায় কোনো বীজতলায় রক্ষা পায়নি। বন্যায় সব লন্ডভন্ড তছনছ করে দিয়েছে ফসলের খেত। বিগত ৪০ বছরেও এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি চোখে দেখেননি তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এম এম শাহনেওয়াজ বলেন, অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধস ও বন্যায় বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নে নয় হাজার ৮৫৫ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারমধ্যে ৪ হাজার ৭৫৭ হেক্টর জমির বীজ ধান। ক্ষতি পোষাতে কৃষকদের বিনামূল্য বীজ, সার সরবরাহ এবং প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।