বিশেষ প্রতিবেদক, বান্দরবান
বৌদ্ধ পূর্ণিমা উৎসবে মেতেছে বান্দরবান। পাহাড়ি পল্লীগুলোতে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসবের দিনটি। বৃহস্পতিবার বান্দরবানে সকালে রাজগুরু বৌদ্ধ প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হয় মঙ্গলময় শোভযাত্রা। শোভাযাত্রাটি রাজার মাঠ হয়ে শহরে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে বোধিবৃক্ষতলে গিয়ে সমবেত হন।
এসময় শোভাযাত্রায় অংশ নেন বোমাং সার্কেল চিফ রাজা উচপ্রæ। এছাড়াও বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষসহ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন ধরনের পাত্রে চন্দন জল,ফুল,জাম পাতা এবং বৃক্ষ সজ্জিত টাকা নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
এদিকে শোভযাত্রা শেষে বোধিবৃক্ষমূলে সমবেত হয়ে পঞ্চশীল, অষ্টশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনার মুক্তি লাভের জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। এসময় ধর্মদেশনা দেন রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ড. উ সুবর্ণ লংঙ্কারা মহাথেরো। ধর্মদেশনা শেষে রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার, উজানী পাড়া বৌদ্ধ বিহার, রামজাদী , স্বর্ণ মন্দির বিহারে উপাসকরা বিহারে সমবেত হয়ে পূণ্যলাভের জন্য বোধিবৃক্ষমূলে চন্দন জল ঢালানো হয়।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক মহাকরণিক গৌতম বুদ্ধত্ব লাভের জন্য ২৯ বছর বয়সে গৃহত্যাগ করেছিলেন। এই দিনে নিরঞ্জনা নদীর তীরে এক বটবৃক্ষ মূলে ৬ বছর কঠোর তপস্যার পর বুদ্ধত্ব লাভ করেন। গৌতম বুদ্ধ আজ থেকে ২৫৬০ বছর আগে জগতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। মহামানব গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহা পরিনির্বাণসহ ত্রিস্মৃতির বিচরিত লাভ হওয়াই প্রতি বছরই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিকে জাঁকজঁমকপূর্ণভাবে বৌদ্ধ পূর্ণিমা হিসাবে পালন করে আসছেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী শৈখ্যাইনু ও উমেসিং মারমা বলেন, গৌতম বুদ্ধ ত্রি-স্মৃতি বিচরিত বলে এই দিনটি আমাদের কাছে অন্যতম পুর্নিমা দিন। সকাল থেকে নিজেদের ঐতিহ্য পোশাক পরিধান করে শোভযাত্রা অংশ নিয়েছি। এই ধর্মীয় দিনে বোধিবৃক্ষমূলে চন্দন জল ঢালানো মাধ্যমে পাহাড়ের অশান্তি মুছে দিয়ে শান্তি ফিরে আসুক এই প্রত্যাশা করছি।
এদিকে রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষু নাইন্দাছাড়া বলেন, এই পবিত্র তিথিতে বিহারে বিহারে ধর্ম দেশনা, সন্ধ্যায় প্রদীপ পূজা, হাজারবাতি উৎসর্গ ও দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি এবং বিশ্বশান্তি কামনার পাশাপাশি ধর্মদেশনা দিয়ে দেশবাসী ও সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করা হবে।